শীতলক্ষ্যায় উদ্ধার একটি লাশ নৌ দুর্ঘটনার নয়: পুলিশ

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (২২ মার্চ) পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি লাশ নৌ দুর্ঘটনায় নিহত কারও নয়। প্রশাসন বলছে, লঞ্চডুবির ঘটনায় আর কেউ নিখোঁজ না থাকায় সন্ধ্যায় উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

গত রবিবার দুপুরে লঞ্চডুবির পর রাত পর্যন্ত ছয় জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। সোমবার ভোরে ডুবে থাকা লঞ্চটি উদ্ধারের পর দুপুর পর্যন্ত আরও দুই জনের লাশ ভেসে ওঠে। মঙ্গলবার উদ্ধার করা হয় তিনটি লাশ। সেই হিসাবে মোট লাশের সংখ্যা ১১। কিন্তু সোমবার যে দুই জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল তাদের একজন নৌ দুর্ঘটনায় নিহত হননি। ফলে লঞ্চডুবির ঘটনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১০ জন।

উদ্ধারকারী সংস্থা ফায়ার সার্ভিস বলছেন, লঞ্চডুবির ঘটনার পর শীতলক্ষ্যা নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা ১১ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিএম কুদরত-ই-খোদা বলেন, ‘যাত্রীবাহী লঞ্চ এবং মালবাহী কার্গোর সংঘর্ষে আমাদের যে লঞ্চডুবি হয়েছিল সে ঘটনার পর এখন পর্যন্ত ১১ জনের লাশ উদ্ধার করতে পেরেছি। তাদের মধ্যে চার জন পুরুষ, চার জন নারী এবং তিন জন শিশু। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছি।’

অজ্ঞাত লাশের পরিচয় শনাক্তের বিষয়টি উল্লেখ করে সংখ্যা জানতে হলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে তদন্ত করে বলা সম্ভব হবে।’

ফায়ার সার্ভিসের নারায়ণগঞ্জের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন জানান, ‘অজ্ঞাত লাশটি উদ্ধার করে আমরা নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। এ ব্যাপারে তারা বলতে পারবেন।’

নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ থানার উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সোমবার সকালে শাহ সিমেন্ট ঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার লাশটি নৌ-দুর্ঘটনায় নিখোঁজ কারও ছিল না। শুরুতে অজ্ঞাত থাকলেও পরে তার পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম জিয়াউর রহমান রিমন (৩০)। তিনি গত ১৮ মার্চ নিখোঁজ হন। ২০ মার্চ যাত্রাবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। জিয়াউর কুমিল্লা মুরাদনগর পায়র গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে যাত্রাবাড়ীতে বসবাস করতেন। সোমবার সন্ধ্যার পরে নিহতের স্বজনরা এসে লাশ শনাক্ত করে নিয়ে গেছেন।’

প্রসঙ্গত, রবিবার (২০ মার্চ) দুপুরে শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর এলাকায় এমভি রূপসী-৯ নামে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় মুন্সীগঞ্জগামী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চের ১৫ থেকে ২০ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন।