ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, ভোগান্তির শেষ কোথায়?

পদ্মা নদী পার হতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে আসা যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রাকের চালকদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। নদী পার হতে এসব ট্রাককে মহাসড়কে অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অনেক সময় দিনও পার হয়ে যায়।

জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম নৌপথ। এই পথ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন পারাপার হয়। তবে বর্তমানে পদ্মায় নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি ঘাট ও ফেরি সংকটে ব্যাহত হচ্ছে যানবাহন পারাপার। এতে গত কয়েক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নদী পারের অপেক্ষায় মহাসড়কে আটকা পড়ছে শত শত যানবাহন।

আরও পড়ুন: ৪ কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে নিয়মিত দীর্ঘ যানজট

যাত্রী দুর্ভোগ কিছুটা কমাতে যাত্রীবাহী যানবাহন ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। এতে দিনের পর দিন মহাসড়কে সিরিয়ালে আটকা থাকছে অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলো।

যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রাকের চালকদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ পদ্মার মোড় পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পণ্যবাহী ট্রাকের লম্বা সারি তৈরি হয়েছে। এছাড়া দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন কমাতে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মাহসড়কের অন্তত চার কিলোমিটার ট্রাকের সারি। এ সময় সড়কের খোলা আকাশের নিচে তীব্র গরমে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন চালক ও সহকারীরা। পাশাপাশি তাদের খাবার, গোসলের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অপরদিকে সময় মতো পণ্য ডেলিভারি না করায় লোকসান গুণতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: লোড-আনলোডে দ্বিগুণ সময়, দীর্ঘ হচ্ছে যানবাহনের সারি

ঘাট সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে এই নৌপথে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। এছাড়া দৌলতদিয়ায় সাতটি ফেরিঘাটের মধ্যে এক ও দুই নম্বর ঘাট দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। নতুন করে নদীতে নাব্যতা সংকটে ৬ নম্বর ঘাটটিও বন্ধ। ৩, ৪, ৫ ও ৭ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। বর্তমানে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় ফেরিঘাটের এপ্রোচ সড়কগুলো নিচু হয়ে গেছে। ফলে যানবাহন লোড-আনলোডে সময় বেশি লাগছে।

তীব্র গরমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় চালক ও সহকারীদের

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে থাকা ট্রাকচালক শুভ, কামরুল হাসান, লিটন মিয়া, রফিকুল ইসলাসসহ কয়েকজন জানান, দুই দিন আগে এসে গোয়ালন্দ মোড়ের সিরিয়ালে আটকে রয়েছেন।

তারা বলেন, ‘গরমে খোলা আকাশের নিচে অনেক ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এখানে গোসল ও খাওয়ার ভালো কোনও ব্যবস্থা নেই। এখান থেকে দৌলতদিয়া ঘাট প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে। কবে কখন এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেয়ে ফেরিঘাটে যাবেন বলতে পারছি না।’

আরও পড়ুন: ‘সকাল থেকে খাই নাই, কখন যে পার হমু ভাবতাছি’

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি ফেরির মধ্যে ১৭টি চলাচল করছে। দুইটি ফেরি মেরামতে রয়েছে এবং একটি মাওয়া ঘাটে গেছে। এছাড়া ঘাট সংকট রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে শিমুলিয়া ঘাটের অধিকাংশ যানবাহন এখান দিয়ে পার হচ্ছে। যে কারণে যানবাহনের একটু সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে। নদীতে নাব্যতা সংকটে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায়, ফেরিতে লোড-আনলোডে দ্বিগুণ সময় ব্যয় হচ্ছে।