বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। যা এই ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন যাত্রী ও চালকরা। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় থেকে হাটিকুমরুল গোল চত্বর হয়ে চান্দাইকোনা পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার জুড়ে চলছে সড়ক প্রশস্তের কাজ। ঈদের আগে কাজ শেষ না হলে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে সিরাজগঞ্জের এ মহাসড়ক। তবে ঈদের আগেই সড়ক পুরোপুরি খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে ঈদে মহাসড়কে যানজট কমাতে ৪০০ পুলিশ সদস্য কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। এ কারণে মহাসড়কের অনেক জায়গায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও রাস্তা ঘুরিয়ে বিপরীত দিকে খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রায়ই বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় মহাসড়ক থেকে শুরু করে সিরাজগঞ্জ অংশের হাটিকুমরুল গোল চত্বর এলাকায় ধীরগতি, আবার কখনও এই অংশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
এদিকে নলকায় নতুন সেতু কাজ শেষ না হলে ঈদে ঘরমুখো মানুষকে মহাসড়কের যানজটের ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তির শিকার হতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন চালক ও যাত্রীরা। তবে ঈদের আগেই সেতুর এক লেন খুলে দিতে কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
ঢাকা-সিরাজগঞ্জ রুটের এসআই এন্টারপ্রাইজের বাসচালক হাফিজুর রহমান বাবু বলেন, বর্তমানে মহাসড়কের যে অবস্থা, যদি নলকা সেতু খুলে না দেওয়া হয় এবং মহাসড়কের কাজ শেষ না হয় তাহলে এই রোজার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।
মীর আখতার হোসাইন লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. এখলাছ উদ্দিন বলেন, ‘আসন্ন ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কের যানজট ও ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আমরা ঈদের ছুটির আগেই নলকার নতুন সেতুর এক লেন খুলে দেবো। মহাসড়কের খানাখন্দগুলো সংস্কারেরও কাজ চলছে। আশা করি ঈদে মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না।’
সওজের সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ঈদের আগেই দ্রুত নলকা সেতুর কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।’ সড়কের অসমতল জায়গাগুলোতে ইট, পাথর ও বিটুমিন দিয়ে সমতল করে মহাসড়কের সব লেন খুলে দেওয়া চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি লুৎফর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এবারের ঈদ যাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ নলকা সেতুর পাশে নির্মিত নতুন সেতুটি খুলে দেওয়ার জন্য দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। আশা করছি ঈদের আগেই নতুন সেতু দিয়ে যানবহন চলাচল করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু পশ্চিমপাড় থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দে রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত মেরামত করার জন্য আমরা সওজ বিভাগের কাছে চিঠি দিয়েছি। তারা কাজও শুরু করেছে।
লুৎফর রহমান আরও বলেন, ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি কমাতে ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে এই মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য চেয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
তবে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে প্রায় ৪০০ পুলিশ সদস্য কাজ করবে। মহাসড়কে মোটরসাইকেল মোবাইল টিমও থাকবে।’
তিনি আরও বলেন,‘ নলকা সেতু ও মহাসড়কের খানাখন্দের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ২০ রমজানের মধ্যে মহাসড়কের খানাখন্দ সংস্কার ও নলকায় নতুন সেতুর উত্তরের এক লেন খুলে দেবে বলে জানিয়েছেন তারা।’