রাজবাড়ীতে ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি

রাজবাড়ী শহরের কয়েকটি এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীতে নতুন করে ৫৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। অতিরিক্ত রোগীর চাপে গত কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওয়ার্ডের বেড-ফ্লোর ছাড়াও খোলা আকাশের নিচে, গাছতলায়, ড্রেনের পাশে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

২৪ ঘণ্টায় ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩৭ জন রোগী রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়াও পাংশায় চার জন, কালুখালিতে দুই জন, বালিয়াকান্দিতে চার জন ও গোয়ালন্দে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাত জন ভর্তি হয়েছেন।

অপরদিকে, ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ৯০ জন, পাংশায় ১৫ জন, কালুখালিতে দুই জন, বালিয়াকান্দিতে পাঁচ জন এবং গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে তিন জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতির কারণ জানতে গত ১২ এপ্রিল সিভিল সার্জন কর্তৃক পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. শামীম আহসানকে। কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৫০ শতাংশ রোগী সরবরাহ করা পানি পান করে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের বড় একটা অংশ রাজবাড়ী পৌরসভার বিনোদপুর, ধুঞ্চি ও লক্ষ্মীকোল এলাকার। এ অবস্থায় সাপ্লাইয়ের পানি ফুটিয়ে পান করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, ‘পৌরসভার সাপ্লাইয়ের পানির জন্য এমন বিপর্যয় ঘটতে পারে। পৌরসভার সরবরাহ করা পানির পাশাপাশি ব্যক্তিগত ট্যাংকের পানির কারণেও হয়েছে এটি নিশ্চিত। ডায়রিয়া পরিস্থিতি উন্নতির জন্য অবশ্যই সবাইকে পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। এর বিকল্প কোনও পথ নেই। বিশেষ করে পৌরসভার পানি অবশ্যই ফুটিয়ে খেতে হবে। বাজারের খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ শুরু করবো। এ ছাড়া পানি পরীক্ষার উদ্যোগ দ্রুত গ্রহণ করা হবে।’

জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, ‘ডায়রিয়ার বিষয়ে সিভিল সার্জন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির একটি প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। এ ব্যাপারে জনসচেতনতার জন্য প্রচারণা চালানো হবে। সবাই একটু সচেতন হলেই আশা করি, ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’