কারখানা মালিকের গরু বেচে শ্রমিকদের বেতন

গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া এলাকায় জিএম অ্যান্ড জেসি কম্পোজিট লিমিটেড নামে একটি কারখানার মালিক ও কর্মকর্তারা শ্রমিকদের বেতন না দিয়েই কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বেতন না পেয়ে কারখানায় অবস্থান করেন শ্রমিকরা। শেষ পর্যন্ত ওই কারখানা মালিকের খামারের গরু বিক্রি করে, ঋণ ও জমা করা অর্থ দিয়ে শ্রমিকদের আংশিক বেতন ও বোনাস দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২ মে) রাতে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের আংশিক টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

গাজীপুর জেলা নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী জানান, রবিবার বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) শ্রমিকদের বোনাস দেওয়ার জন্য ১০ লাখ টাকা ওই কারখানার মালিককে ধার হিসেবে দেয়। তাছাড়া শ্রমিকদের উপস্থিতিতে কারখানার পাশে থাকা মালিকের খামার থেকে ৯টি গরু বিক্রি এবং মালিকের জমা থাকা চার লাখ ৮৯ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ২২ লাখ ৩৯ হাজার টাকার ব্যবস্থা করা হয়। পরে কারখানার ৫৪৪ জন শ্রমিকদের প্রত্যেককে থোক বরাদ্দ হিসেবে চার হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।

তিনি জানান, এক জন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকায় তাকে টাকা দেওয়া যায়নি। তবে তার জন্য রাখা সাত হাজার টাকা কারখানার হিসাবরক্ষকের কাছে জমা রাখা হয়েছে। রবিবার রাতেই আংশিক বেতন-বোনাস পেয়ে শ্রমিকরা ঈদ করতে কারখানা ছেড়ে বাড়ির উদ্দেশে বের হয়ে গেছেন।

প্রসঙ্গত, শনিবার কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার কথা বলে ওই দিন দুপুরে শ্রমিকদের কর্মরত অবস্থায় রেখে কৌশলে কারখানা থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় কারখানার বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারাও বের হয়ে যান। ওই সন্ধ্যায় শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে পাশের দোকান থেকে কিনে ইফতার করেন এবং দোকান থেকে কলা বিস্কুট কিনে সেহরি করেন। গাজীপুর জেলা প্রশাসন, শিল্প পুলিশ ও মহানগর পুলিশের অনুরোধে শ্রমিকরা কোনোরকম ভাঙচুর ও অবরোধ না করে কারখানার ভেতরেই শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেন। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে শ্রমিকদের আংশিক বেতন-বোনাস দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।