ঈদের দিনে ফরিদপুরে সংঘর্ষে প্রাণ গেলো ২ জনের

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়িতে দুই জনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুর ২টার দিকে গোহাইলবাড়ি বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আকিদুল মোল্লা (৪৬) ও খায়রুল শেখ (৪৫)। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোস্তফা জামান সিদ্দিকীর সঙ্গে গোহাইলবাড়ি এলাকার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানের দীর্ঘদিন বিবাদ চলছে। সম্প্রতি গোহাইলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচনে আরিফের পক্ষকে পরাজিত করে মোস্তাফা জামান সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ঘটনায় এই দুই পক্ষের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। মঙ্গলবার ঈদের দিন দুপুরে মোস্তফা জামান সিদ্দিকী গোহাইলবাড়ি বাজারে তার ব্যবসায়িক ঘরে লোকজন নিয়ে বসে ছিলেন। এই সময় আরিফের পক্ষের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

এ সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেখানে চরদৈত্বেরকাঠি গ্রামের মৃত হাসেম মোল্লার ছেলে আকিদুল মোল্লা ও একই গ্রামের মৃত মোসলেম শেখের ছেলে খায়রুল শেখকে কুপিয়ে আহত করে। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক আকিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

খায়রুলকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। তবে সাতৈর বাজারে পৌঁছালে তিনিও মারা যান। গুরুতর আহত মোস্তফা জামান সিদ্দিকীর দুই ভাই আলমগীর সিদ্দিকী (৫২) ও মাসুদ আহমেদকে (৪০) ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। অপর আহত রাজিবুল ইসলাম (৩০), কাদের মোল্লা (৪০) ও সোহেল শেখকে (২০) বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধে উত্তর বোয়ালমারীর কমান্ডার ও ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবকে চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে মোস্তফা জামান সিদ্দিকী দাবি করেন, ‘বজলুর রহমান স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক। কাগজপত্র জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। এ নিয়ে আমার বাবা লড়াই সংগ্রাম করেছেন, আদালতে গিয়েছেন। এরপর স্কুল নির্বাচনে আমি জিতেছি। এসব বিষয় নিয়ে ওরা ক্ষিপ্ত ছিল। মূলত আমাকে হত্যা করার জন্য ওরা সংঘবদ্ধ হয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল।’

এসব বিষয়ে জানতে আরিফুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর জানান, সংঘর্ষে আকিদুল ও খায়রুল নামে দুই জন মারা গেছেন। এলাকায় ডিবি পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। লাশ বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর পাঠানো হবে।