মাদ্রাসার মাঠে ফেলে ২ শিক্ষার্থীকে পেটালেন সুপার 

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ক্লাস চলাকালে আম গাছে ওঠার ঘটনায় মাদ্রাসা সুপার রফিকুল ইসলাম দুই শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত ও নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। 

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম কালীগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মূলগাঁও দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার। তিনি পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্বাটি গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে। নির্যাতনের শিকার দুই শিশু ওই মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানান, গত ২৯ মে মূলগাঁও দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার মাঠে ওই মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করছিলেন মাদ্রাসা সুপার রফিকুল ইসলাম। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। 

ভিডিওতে দেখা যায়, এক শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করতে যান রফিকুল ইসলাম। পরে ঘাড় ধরে মাটিতে ফেলে লাথি মারেন। এ সময় আরেক ছাত্রকেও একইভাবে বেত্রাঘাত করতে গিয়ে পর পর দুটি লাথি মারেন। ভয়ে ওই ছাত্র দৌড় দিলে সুপার তার পিছু নিয়ে দৌড়াতে থাকেন। এছাড়াও একই মাদ্রাসার আরও বড় দুই শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করে চলে যান তিনি। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ক্লাস চলাকালে আম গাছে ওঠায় ওই দুই ছাত্রকে শাসন করেছি। কিন্তু এ ঘটনার জন্য তাদের অভিভবাকরা অভিযোগ করেননি। এর জন্য আমি অনুতপ্ত। এতটা বাড়াবাড়ি করা ঠিক হয়নি।’

মূলগাঁও দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আহমেদুল কবির খান আবু বলেন, ‘এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি।’ ভিডিও দেখেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, আমি ঘটনার কথা শুনেছি।’

কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর-ই-জান্নাত বলেন, ‘ভিডিওটি আমার নজরে এসেছে।’ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।   

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসসাদিক জামান বলেন, ‘ভিডিওটি দেখেছি। এই ধরণের কাজ একজন মাদ্রাসা সুপার করতে পারেন, তা সত্যি দুঃখজনক। এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপারসহ নির্যাতনের শিকার ওই দুই শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’