শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, মামলায় কিশোর বললেও ছাত্রের বয়স ১৯

সাভারে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার তিন দিন পর হত্যায় ব্যবহৃত স্টাম্প ও সেদিনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এখনও অভিযুক্ত ছাত্রকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার এজাহারে কিশোর বলা হলেও সেই ছাত্রের বয়স ১৯ বছর।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিকালে সাভারের আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে হামলায় ব্যবহৃত স্টাম্প ও সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকে রক্তমাখা স্টাম্প স্কুলের মাঠেই পড়েছিল। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই স্টাম্প পুলিশকে দেখিয়ে দেন স্কুলের অধ্যক্ষ।

এদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রের বয়স মামলার এজাহারে ১৬ দেখানো হলেও স্কুলের রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী, বয়স ১৯ বছর। এসএসসির রেজিস্ট্রেশনে ওই ছাত্রের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি। 

স্কুলের অধ্যক্ষ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকালে স্কুলের মাঠ থেকে হামলায় ব্যবহৃত স্টাম্প ও স্কুল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু এখনও ওই ছাত্র গ্রেফতার হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এসএসসির রেজিস্ট্রেশনে ওই ছাত্রের বয়স ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি উল্লেখ করা হয়েছে। হিসাবে তার বয়স ১৯ বছর। ওই ছাত্র মাদ্রাসায় লেখাপড়ার পর স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। এ জন্য অন্যদের চেয়ে তার বয়স বেশি। কিন্তু মামলার এজাহারে কীভাবে তার বয়স পুলিশ ১৬ উল্লেখ করেছে, তা আমি জানি না।’

এ বিষয়ে আশুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান বলেন, ‘হত্যায় ব্যবহৃত আলামত হিসেবে স্টাম্প ও সেদিনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে দশম শ্রেণির ছাত্র হওয়ায় মামলায় আনুমানিক ১৬ বছর বয়স লেখা হয়েছিল। তখন আমাদেরকে তার বয়স সম্পর্কে কিছুই জানায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।’ 

ঘটনার তিন দিন পর আলামত জব্দের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেদিন থেকে অভিযান চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে গ্রেফতার করা হবে।’

এদিকে, শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীকে গ্রেফতারের দাবি জানান। এছাড়া ছয় দফা দাবি জানান তারা।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। শিক্ষক উৎপল কুমার মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ করে এক ছাত্র মাঠ থেকে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়। উৎপলকে দ্রুত উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে এনাম মেডিক্যালে আইসিউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে তার মৃত্যু হয়েছে। হত্যাকারীকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।