পোশাককর্মী সবুজের লাশের আরেক টুকরো উদ্ধার, গ্রেফতার ‘বন্ধু’

পোশাককর্মী সবুজ বার্নার্ড ঘোষালের (৩১) লাশের আরও এক টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাহিনুর (৩২) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। 

রবিবার (০২ অক্টোবর) বিকালে মানিকগঞ্জ শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার দুপুরে গাজীপুর পিবিআইয়েরর পরিদর্শক হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শাহিনুর সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বালিয়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। তিনি কালীগঞ্জের দক্ষিণ পাঞ্জোড়া এলাকায় পূর্বাচল অ্যাপারেলস লিমিটেডের পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন। চাকরি করতেন স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায়। হত্যার শিকার সবুজ গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের ভাসানিয়া গ্রামের অমূল্য বার্নার্ড ঘোষালের ছেলে। তিনি পার্শ্ববর্তী পানজোড়া গ্রামের পূর্বাচল অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় কোয়ালিটি চেকার (কিউসি) পদে চাকরি করতেন।

পিবিআই পরিদর্শক হাফিজুর রহমান জানান, ঘটনার পর শাহিনুর পালিয়ে যান। পরে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল মানিকগঞ্জ শহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে সবুজের মুঠোফোন এবং তার দেওয়া তথ্যমতে কালীগঞ্জের দক্ষিণ পানজোড়ার এলাকার ভাড়া বাসার রান্নাঘর থেকে লাশের আরেকটি অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বঁটি জব্দ করেছেন পিবিআই সদস্যরা। সবুজ বার্নাড ও শাহিনুর এলাকার দুই পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তারা পূর্বপরিচিত এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বও ছিল।

সবুজের বাবা অমূল্য বার্নার্ড জানান, গত বুধবার (২৮ অক্টোবর) সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। ওইদিন রাতে বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কোনও সন্ধান পাননি। পরদিন বৃহস্পতিবার সবুজের কর্মস্থলে গিয়ে জানতে পারেন, বুধবার সকাল ৬টায় কারখানায় প্রবেশ করেন এবং বিকাল ৪টা ৬ মিনিটে কারখানা থেকে বের হয়ে যান তিনি। সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার সবুজের বাবা কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। 

আরও পড়ুন: ডোবা ও জঙ্গলে পোশাক শ্রমিকের সাত টুকরো লাশ

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন জানান, শনিবার বেলা ১১টার দিকে পূর্বাচল অ্যাপারেলস কারখানার দক্ষিণের ডোবায় কোমরের নিচের অংশ এবং উত্তরের জঙ্গলে দুই হাত পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে সাড়ে ১১টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে কোমর থেকে হাটু পর্যন্ত অংশ, আঙুলবিহীন কাটা দুই হাত ও একটি জিন্সের প্যান্ট উদ্ধার করে। তল্লাশি চালিয়ে বিকালে তার বিচ্ছিন্ন মাথা, কোমর থেকে গলা পর্যন্ত ও এক পায়ের কাটা দুটি খণ্ড বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, খবর পেয়ে সবুজের স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে লাশ শনাক্ত করেন। দুর্বৃত্তরা হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে রাখে। গতকাল সবুজের বাবা কালীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেছেন।