পা দিয়ে লিখে স্বপ্ন ছুঁতে চলেছেন হাবিবুর

জন্ম থেকে দুই হাত নেই। তাই বলে থেমে যায়নি হাবিবের পথচলা। পায়ের ওপরই রেখেছেন অটুট ভরসা। এখন দৃঢ় মনোবল আর প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির গুণেই স্বপ্ন জয়ের পথ ধরেছেন তিনি। চলতি বছরের আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পা দিয়ে লিখছেন হাবিব।

মো. হাবিবুর রহমান (১৯) রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হেমায়েত খালী গ্রামের কৃষক আ. সামাদের সন্তান তিনি। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে মা-বাবার দুশ্চিন্তার শেষ নেই।

হাবিবুর বলেন, ‌‘আমার জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। তবু আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। পা দিয়ে লিখে আমি হেমায়েতখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। পরে ২০১৫ সালে পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৬৩ পাই। ২০১৮ সালে দাখিল পরীক্ষায় পাই জিপিএ-৪.৬১। এবার একই মাদ্রাসা থেকে পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (কেন্দ্রে) আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছি। সবার কাছে দোয়া চাই। আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখেন।’

হাবিবুরের পরিবারের স্বজনরা জানান যে জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও লেখাপড়ায় তার আগ্রহ অশেষ।

বিষয়টি উল্লেখ করে তার বড় দুলাভাই (ভগ্নিপতি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা তাকে সাহস দিয়ে যাচ্ছি। ভালো ফল করে সে যেন ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারে।’

পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও চলমান আলিম পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওয়াবুল্লাহ ইব্রাহিম বলেন, ‘জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী হাবিবুর রহমান আমার তত্ত্বাবধানে এই কেন্দ্রেই জেএসসি ও দাখিল পরীক্ষা দিয়েছে এবং চলমান আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে। হাবিবুর অত্যন্ত মেধাবী। তার জন্ম থেকেই দুটি হাত না থাকলেও তার পায়ের লেখনী দ্বারা বোঝার উপায় নেই যে তার শারীরিক সমস্যা আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে শুনেছি সে অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান। সাহায্য-সহযোগিতা পেলে হয়তো সে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। সমাজের বিত্তবান ও সরকারের পক্ষ থেকে তার পাশে এসে দাঁড়ালে হয়তো সে আরও ভালো কিছু করতে পারবে।’