মালিককে গুরুতর আহত করে নারীর প্রাণ কেড়ে নিলো মহিষ

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে মহিষের আক্রমণে হাজেরা বেগম (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। রবিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের তারটিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও পুলিশ প্রশাসন স্থানীয়দের সহযোগিতায় মহিষটিকে মেরে ফেলেছে।

জানা গেছে, রবিবার সকাল ১০টার দিকে এলাসিন ইউনিয়নের বারপাখিয়া গ্রামের ঝরু মিয়ার ছেলে শরিফ মিয়ার একটি গৃহপালিত মহিষ আক্রমণাত্মক হয়ে প্রথমে শরিফ মিয়ার ওপর চড়াও হয়। শিংয়ের আঘাতে শরিফ মিয়া গুরুতর আহত হন। পরে মহিষটি এলোপাতাড়ি দৌড়াতে থাকে। সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই আক্রমণ করেছে।

এলাসিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক রতন জানান, পাগলা মহিষের আক্রমণে এ ইউনিয়নের তিন গ্রামের অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মালিক শরিফ মিয়ার অবস্থা খুবই গুরুতর। পরে মহিষটি লাউহাটি ইউনিয়নের তারটিয়া গ্রামে চলে যায়।

লাউহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন মোহাম্মদ খান জানান, মহিষের আক্রমণে তারটিয়া গ্রামের হাজেরা বেগম নামের এক নারী মারা গেছেন। এ ছাড়াও পাগলা মহিষটি লাউহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসমত আলী খানসহ অন্তত ৮-১০ জন ব্যক্তিকে আক্রমণ করে আহত করেছে। গুরুতর আহতাবস্থায় হাসমত আলীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বাহাউদ্দিন সারওয়ার রিজভী জানান, খবর শোনার পর দ্রুত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রানা মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার ট্রাইব্যুলাইজার টিমকে বিষয়টি জানানো হয়। তারা এসে মহিষটিকে অচেতন করার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু এর আগেই মানুষ দা ও শাবল দিয়ে কুপিয়ে মহিষটিকে মেরে ফেলে।

দেলদুয়ার থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, একটি মহিষ দুই ইউনিয়নে একাধিক গ্রামে তাণ্ডব চালায়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে আসা একটি টিমসহ পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। মহিষটি একটি বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালালে ওই বাড়ির এক পুরুষ সদস্য প্রাণ বাঁচাতে বাঁশঝাড়ে গিয়ে ওঠেন। মহিষটি সেখানে তাকে আক্রমণ করতে গিয়ে ঝাড়ে আটকে যায়। পরে মানুষের হাতে মারা যায় মহিষটি।