ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী

গাজীপুরের টঙ্গীতে পোশাকশ্রমিক শিরিনা আক্তারকে কুপিয়ে আহত করে স্বামী সিদ্দিকুল ইসলাম আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। আহত স্বামী-স্ত্রীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে টঙ্গীর পাগাড় (ঝিনু মার্কেট) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি সিদ্দিকুল ইসলাম ও শিরিনা আক্তারের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। শিরিনা পেশায় পোশাকশ্রমিক। সিদ্দিকুল কোনও কাজ করতেন না। তাদের সংসারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। তাদের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারীতে। তারা দুজনই টঙ্গীর পাগাড় এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ছাড়াছাড়ি হওয়ার জেরেই শিরিনা আক্তারকে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন তার বোন রিনা আক্তার।

শিরিনার ছোট বোন রিনা আক্তার জানান, প্রায় ১০ বছর আগে সিদ্দিকুল শিরিনাকে বিয়ে করেন। সিদ্দিকুল কোনও কাজ করতেন না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। স্বামী সিদ্দিকুল কয়েকদিন আগে ভাড়া বাসা থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে তার কোনও খোঁজখবর ছিল না। এরপর মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) স্ত্রী শিরিনা আদালতে গিয়ে স্বামী সিদ্দিকুলকে ডিভোর্স দেন। ডিভোর্সের খবর জানতে পেরে সিদ্দিকুল বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় বাসায় ঢুকে শিরিনাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সিদ্দিকুল তার নিজের গলায় আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বোন সন্ধ্যার পর থেকেই বাসায় ছিল। দুলাভাই হঠাৎ বাসায় ঢুকে আমার বোনকে বঁটি দিয়ে কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আমরা খোঁজ পেয়ে দ্রুত দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নুসরাত জাহান বলেন, ‘তাদের দুজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। সিদ্দিকুলের কণ্ঠনালির কিছু অংশ কেটে গেছে। দুজনের অবস্থায়ই গুরুতর। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান জানান, তাদের কাছে এ বিষয়ে এখনও কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।