গাজীপুরের টঙ্গীতে শিশু ছেলে আব্দুর রহমান মুছাকে (১১) গলা টিপে হত্যার অভিযোগে স্বামী মহিউদ্দিনকে (৩৫) প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মা শরিফুন নেছা। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের বাবাকে গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টঙ্গী পূর্ব থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) আলমগীর হোসেন।
হত্যার শিকার শিশু আব্দুর রহমান মুছা বাবা-মায়ের সঙ্গে টঙ্গীর গোপালপুর এলাকায় পান্নু খানের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতো। সে স্থানীয় হলি ক্রিসেন্ট হাই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
শিশুর বাবা গ্রেফতার মহিউদ্দিন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া (ডুয়াটি) গ্রামের সিরাজ মাতবরের ছেলে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে ভাঙা থানা থেকে টঙ্গী থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।
মামলায় অপর আসামিরা হলো- মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া (আরজু ডুয়াটি) গ্রামের মিরাজ মাতাব্বরের স্ত্রী, বাদীর শাশুড়ি শাহানা (৫৫), দেবর সজিব (২০), মহিউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বাউনকান্দা গ্রামের আজিজুল শেখের ছেলে সুমনা (২৬)। তারা প্রত্যেকেই মহিউদ্দিনের সঙ্গে টঙ্গী পূর্ব থানার গোপালপুর এলাকার পান্নু খাঁনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতো।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) উপ- পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) আলমগীর হোসেন বলেন, হত্যার শিকার শিশু আব্দুর রহমান মুছার মা শরিফুন নেছা পোশাক শ্রমিক। মহিউদ্দিনের সঙ্গে ১৬ বছর আগে তার বিয়ে হয়। তাদের ছেলে সন্তান আব্দুর রহমান মুছা। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লাঞ্চ বিরতিতে বাসায় আসেন শরিফুন। লাঞ্চ শেষে ছেলে মুছা ও তার বাবা মহিউদ্দিনকে বাসায় রেখে অফিসে চলে যান। বিকালে বাবা মহিউদ্দিন ছেলে মুছাকে জামা কিনে দেওয়ার কথা বলে মার্কেটে নিয়ে যায়। ছেলে বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় মা তার বাবাকে ফোন করে ছেলেকে বাসায় নিয়ে আসতে বলে। এ সময় সে জানায় তার ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছে না এবং সাভার এলাকায় খোঁজাখুজির কথা বলে মোবাইল বন্ধ করে রাখে। এ ঘটনায় শিশুর মা টঙ্গী পূর্ব থানায় ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মহিউদ্দিনকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তায় তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। একপর্যায়ে সে তার শিশু ছেলেকে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার তুরাগ থানার দিয়াবাড়ী (কাশবনের) ভেতর শ্বাসরোধে হত্যা এবং লাশ গুম করে ঝোপের ভেতর ফেলে রাখার কথা স্বীকার করে। মহিউদ্দিনের স্বীকারোক্তিতে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) কাশবনের ঝোপের ভেতর থেকে শিশু আব্দুর রহমান মুসার লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।