গাজীপুরের শ্রীপুরে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে টেক্সটাইল স্কুলের শিক্ষার্থী জিহাদ হাসান জয়কে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা আসামি মোজাম্মেল হকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিলে ৩টি টিনশেড ঘর পুড়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ তিন নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করে।
শনিবার (১০ মে) সকালে নিহত শিক্ষার্থীর বাবা বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এর আগে শুক্রবার (৯ মে) রাত ৯টায় শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ এলাকায় সরকার মার্কেটের সামনে শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। জিহাদ হাসান জয় (১৫) লোহাগাছ এলাকার বোরহান উদ্দিনের ছেলে। সে শ্রীপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (ভোকেশনাল) স্কুলের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।
মামলায় আসামীরা হলেন, একই এলাকার আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে মোজাম্মেল (৩৩), সাগর (৩০), মৃত জবেদ আলীর ছেলে আবু বকর সিদ্দিকসহ (৫৫) অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ রাতেই মামলার তিন নম্বর আসামি আবু বকর সিদ্দিককে গ্রেফতার করে। পরে ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার দুপুরে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিকালে সরকারবাড়ী মাঠে কয়েকজন বন্ধুরা মিলে ফুটবল খেলে। খেলা শেষে জয় বাসায় চলে যায় এবং অন্যরা সরকার মার্কেটে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। তাদের মধ্যে কোনও একটি বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলে মোজাম্মেল মুদিদোকানি হাবিবুর রহমানের ছেলে জুনায়েদকে হুমকি দেয়। পরে মোজাম্মেল জয়কে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে সরকার মার্কেটে আসতে বলে। এ সময় জুনায়েদকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মোজাম্মেল দৌড়ে বাড়ি থেকে ছুরি এনে জয়ের পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা জয়কে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বাবা বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মোজাম্মেল জিহাদকে ফোন করে সরকার মার্কেটের সামনে যেতে বলে। সেখানে গেলে মোজাম্মেল ও তার বন্ধুদের জটলা দেখে জিহাদ জানতে চায় এখানে এতো লোকজন কেন? এ কথা জিজ্ঞেস করতেই মোজাম্মেল দৌড়ে বাড়ি থেকে ছুরি নিয়ে এসে জয়ের পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘গতকাল রাতে লোহাগাছ এলাকায় এক ছেলে আরেক ছেলেকে ছুরি মারার খবরে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনার দিন বিকালে স্থানীয় মাঠে ফুটবল খেলা হয়। রাতে জিহাদ হাসান জয় এবং মোজাম্মেল হকের বন্ধুরা স্থানীয় সরকার মার্কেটে একত্রিত হয়। এ সময় তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হলে জিহাদ হাসান জয়কে ছুরিকাঘাত করলে তার মৃত্যু হয়। রাতেই পুলিশ একজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে।’