গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদকাসক্ত ছেলে আনোয়ার হোসেনের (২৫) অত্যাচার, নির্যাতন সইতে না পেরে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে ছেলেকে হত্যার পর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেছেন বাবা মোহাম্মদ আলী। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের নানাইয়া (আটিপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আনোয়ার হোসেন প্রহলাদপুর ইউনিয়নের নানাইয়া (আটিপাড়া) গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। বাবা মোহাম্মদ আলী একই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে।
ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, জীবিকার তাগিদে ছেলে আনোয়ার হোসেনকে প্রায় সাত বছর আগে মালয়েশিয়াতে পাঠান বাবা মোহাম্মদ আলী। প্রবাস থেকে ফিরে ছেলে আনোয়ার হোসেন মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে তাকে মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে ভর্তি করলে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠে। পরে আবার তাকে সৌদি পাঠিয়ে দেয়। সেখান তিন বছর প্রবাসজীবন কাটিয়ে গত এক বছর আগে বাড়িতে আসে। পরে ছেলে আবার মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে এবং বাবার জমানো টাকা খরচ করে ফেলে। এরপর প্রায়ই বাবার কাছে থেকে টাকা চেয়ে নিতো। না দিলে বাড়িতে ভাঙচুর করতো এবং মারধর করতো। এ সময়ের মধ্যে বাবাকে না জানিয়ে ছেলে কৃষক বাবার ৮টি গরু এবং বাড়ির পুকুরের মাছ বিক্রি করে ফেলে।
তিনি আরও জানান, কৃষক বাবার গোয়ালঘরে ১১টি গরু ছিল। মঙ্গলবার বিকালে ছেলে গোয়ালঘরে গিয়ে গরুকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। বাবা গরু পেটাতে ছেলেকে নিষেধ করে। এ সময় ছেলে বাবাকে বলে তোমাকেও মেরে ফেলবো। একপর্যায়ে বাবার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং বাবার গায়ে হাত তোলে।
এ নিয়ে বাবার মনে ক্ষোভ জন্ম নেয় এবং সেদিন রাত ৩টার দিকে ঘুমন্ত ছেলেকে বঁটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। পরে সকালে বাবা নিজেই থানায় উপস্থিত হয়ে ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।