টাঙ্গাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ৩ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে সাড়ে ৮ লাখ টাকা লুটের অভিযোগে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকালে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপপরিচালক আবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত এ আদেশ দেওয়া হয়।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ও জিয়াউর রহমান। গত ১৮ জুন জেলার ভূঞাপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ছালেহা বেগমের বাড়িতে অভিযানের নামে লুটের এ অভিযোগটি ওঠে।

অধিদফতরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত অফিসে আদেশে বলা হয়, ছালেহা বেগমের বাড়ি থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্তপূর্বক সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ধারা ১২-এর উপধারা ১ মোতাবেক সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরের মধ্যে তাদের প্রধান কার্যালয়ে যোগদান করার আদেশ করা হয়েছে। এর আগে সাবেক কাউন্সিলর ছালেহা বেগম অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তিনি বলেন, ‘গত ১৮ জুন সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের লোকজন প্রথমে আমার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে কোনও মাদকদ্রব্য না পেয়ে তাদের গাড়ির তেল খরচের জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন আমি তাদের ১০ হাজার টাকা দিই। পরবর্তীতে তারা আমাকে বাকি ১০ হাজার ঢাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে বলে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে তারা পুনরায় আমার ঘরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র এলোমেলো করতে থাকেন। প্রায় ৩ ঘণ্টার অধিক সময় নাটকীয়ভাবে অভিযান চালিয়ে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখানো হয়। একপর্যায়ে তারা ঘরের আলমারির তালা খুলে সেখানে থাকা নগদ ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা নেন। এ ছাড়া আমার ছেলের ঘরে প্রবেশ করে ঘরের আসবাবপত্র এলোমেলো করে ও ঘরের আলমারির ড্রয়ারে থাকা নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেন। টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে, আমাকে ও আমার ছেলের স্ত্রীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। পরে জবানবন্দি ভিডিও রেকর্ড করা হয়।’

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপপরিচালক আবুল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত করে। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়াও দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’