৩ দিনেও নেভেনি আগুন

পূর্ব সুন্দরবনে রেড এলার্ট, প্রবেশাধিকার বন্ধ ঘোষণা

sundarbon-3সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের পঁচিশ নম্বর কম্পার্টমেন্টের তুলাতলা ও টেংরা এলাকার আগুন তিনদিনেও সম্পূর্ণ নেভাতে পারেনি বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। প্রায় ৩০ একর বনভূমির বিভিন্ন স্থানে এখনও ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাকিয়ে আগুন জ্বলে উঠছে।

সুন্দরী, গেওয়া, বলাসহ অসংখ্য গাছপালা ও লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া বন সংলগ্ন এলাকার শতাধিক মানুষ স্বেচ্ছায় আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এবং পানি সরবরাহের সুব্যবস্থা না থাকায় আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ বছর সংঘটিত চার দফা অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে এটিই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। আগুনের তীব্রতা কমেছে এবং তা এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেছে বন বিভাগ। শুক্রবার দুপুরে বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. জহির উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

sundarbon-1পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ (শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ) জুড়ে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালদের পাস-পারমিট এবং বনে সব ধরনের লোক প্রবেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে পূর্ব সুন্দরবন জুড়েই এ নির্দেশ জারি করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। এ দুটি রেঞ্জে র‌্যাব ও কোস্টগার্ড সদস্যরা টহলে রয়েছে। এর আগে বৃহষ্পতিবার শুধুমাত্র চাঁদপাই রেঞ্জে সব ধরনের পাস-পারমিট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুন্দরবন সুরক্ষার স্বার্থে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সুন্দরবনের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত সব ধরনের পাস-পারমিট বন্ধ ও সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে যারা পাস পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে অবস্থান করছেন তাদের দ্রুত বন থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পাশাপাশি জিপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের কাজ চলছে। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

sundarbon-2বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক মো. মানিকুজ্জামান মানিক বলেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট বিরতিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ঘটনাস্থলের প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। দমকল কর্মীরা প্রখর তাপদাহে অসুস্থ্ হয়ে পড়ছে। এজন্য খুলনা ফায়ার সার্ভিস থেকে ১২ সদস্যের একটি দল শুক্রবার সকালে সুন্দরবনে এসে কাজে যোগ দিয়েছেন। তাছাড়া তীব্র বাতাসের কারণে আগুন নেভানোর কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় এখনও ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাকিয়ে আগুন জ্বলে উঠছে। আগুন পুরোপুরি নেভাতে কতো সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না। সম্পূর্ণ নিভে না যাওয়া পর্যন্ত দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করবেন বলে জানান তিনি।

প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. ইউনুছ আলী বলেন, অপরাধীদের বিষয়ে বন অধিদপ্তর জিরো টলারেন্স দেখাবে। যাদের অবহেলায় সুন্দরবনে নাশকতা হচ্ছে সেসব  বনকর্মীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 আরও পড়ুন:

সুন্দরবনে আগুন লাগার পেছনে মধু আহরণকারীরা দায়ী: বন ও পরিবেশমন্ত্রী

/বিটি/