মুলার কেজি ৪ টাকা!

1শীত মৌসুমে দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজির বাজার যশোরের বারীনগর হাট সয়লাব হয়ে গেছে মুলায়। তবে দাম একেবারে কম। ৪ থেকে ৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে শীতকালীন এই সবজি। অন্য সবজিও হাটে উঠছে, তবে পরিমাণে কম।
রবিবার (২৯ নভেম্বর) ছিল বারীনগরের হাট, কিন্তু বাজারে অন্য সবজি তেমন না উঠলেও প্রচুর মুলার আমদানি হয়। সকালে অল্প কিছুসংখ্যক কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে আসেন। তারা বলছেন, নভেম্বরের শেষদিকে শীতের সবজিতে ভরপুর থাকতো এই হাট। এবারের মৌসুমে আগাম সবজি বিক্রি হয়েছে বেশ দামেই।
কৃষকরা জানিয়েছেন, বেগুন, মুলা, পাতাকপি, ফুলকপি, শিম মাসখানেক আগে তারা ভাল দামে বিক্রি করেছেন। কিন্তু এখন দেশের অন্যান্য জেলার সবজি বাজারে আসায় চাহিদা কমে এসেছে। সেকারণে সবজির দাম এখন বেশ কম।
বারীনগর বাজারে আজ মুলা ৩-৫ টাকা কেজি, বেগুন ১৮-২২ টাকা, শিম ২০-২২ টাকা, ফুলকপি ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ১৮-২০ টাকা পিস দরে বিক্রি হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের সাখাওয়াৎ হোসেন নিয়ে এসেছিলেন প্রায় ৮ মণ মুলা। বিক্রি করেছেন মাত্র ১ হাজার টাকায়। মণপ্রতি বিক্রি হয়েছে ২৫০টাকায়। কিন্তু নভেম্বরের শুরুতে তিনি বিক্রি করেন ২০০০ টাকা মণ দরে।
নিশ্চিন্তপুরের কৃষক মো. রিপন বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষ ও নভেম্বরের শুরুতে দু’দফায় মুলা বিক্রি করেছেন বেশ দামেই। তখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ চার-পাঁচ টাকার বেশি দাম উঠছে না।
তিনি বলেন, ৫ ঝুড়ি মুলা মাঠ থেকে তুলে, ধুয়ে সেগুলো হাটে আনতে প্রায় ১২শ’ টাকা খরচ হয়েছে। ১৫শ’ টাকা দাম চেয়েছি; কিন্তু পাইকাররা ৬০০ টাকা দাম উঠিয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ লালু বলেন, দিন যতো যাচ্ছে বেগুনের দাম তত কমছে। এই হাটে ৫০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি করেছি বেগুন। আজ সাদাবল (সবুজ গোল) বেগুনের দাম মণপ্রতি ৫৬০ টাকা আর ডাঙরের (বেগুনি লম্বা) ৪৪০ টাকা দাম বলছে পাইকাররা। এরকম হলে তার বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
ব্যাপারি হাফিজুর রহমান জানান, তিনি শরিয়তপুর, মাদারীপুর এলাকায় সবজি পাঠান। বাজারে এখন সবজি কম উঠছে। তাছাড়া জেলায় জেলায় চাষকৃত সবজিও উঠতে শুরু করেছে। সে কারণে যশোরের এই সবজির বেশি একটা চাহিদা নেই। গতবছর এইসময়ে যেখানে তিনি তিন ট্রাক মাল পাঠিয়েছেন, একইসময়ে বর্তমানে এক ট্রাকের বেশি পাঠাতে পারছেন না। তিনি বলেন, আমাদের ক্রয়মূল্যের সঙ্গে কেজি প্রতি ৫টাকা খরচ ধরেই সবজি পাঠাতে হয়। সেক্ষেত্রে বাজারে কেমন দাম পাওয়া যাবে তা এখনই বলতে পারছি না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক দীপঙ্কর দাস বলেন, চলতি বছর যশোর জেলায় সবজির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে ১৪ হাজার ৩২০ হেক্টর। আশা করা যায়, এবার লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত আবাদ হবে। কেননা এবার সবজির চাহিদা ও দাম দুটোই ভাল পাচ্ছেন কৃষকরা।