‘মুজিবনগর-কলকাতা স্বাধীনতা সড়ক সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে’

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিআরডি) মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, মুজিবনগর আম্রকানন আমাদের জাতিগতভাবে একটি স্মৃতির জায়গা। অত্যন্ত আবেগের একটি জায়গা। এখানকার স্মৃতি যেমনি সংরক্ষণ করা দরকার, তেমনি এই সড়ক দিয়ে আমাদের প্রথম সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ এসেছিলেন, যা স্মৃতি হয়ে আছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই সড়কটি আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতা সড়ক বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের যাতায়াতের ব্যবস্থা সহজ হবে। পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) মেহেরপুরের মুজিবনগরে মুজিবনগর-কলকাতা ঐতিহাসিক স্বাধীনতা সড়ক পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল এ সড়ক দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ ভারত থেকে মুজিবনগরে এসে শপথগ্রহণ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে স্বাধীনতা সড়কটি আগামী মার্চে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্বোধনের কথা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মুজিবনগরের সঙ্গে কলকাতার সড়ক যাতায়াত শুরু হবে।

সড়কটির মানসম্মত উন্নয়নের কাজ দ্রুত শুরু হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতার অনেক স্মৃতিবিজড়িত স্থান অবহেলায় পড়ে ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যেমনভাবে সম্মান করা হচ্ছে, তেমনি যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোও সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, রাস্তাটি হলে এখান দিয়ে দু’দেশের মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন। রাস্তাটি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সার্বিক বিষয়ে উন্নয়ন হবে, অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও সংরক্ষণ হবে।

পরিদর্শনকালে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে মুজিবনগরে এক হাজার কোটি টাকার কাজ হবে। এর নকশাও প্রায় চূড়ান্ত। খুব দ্রুত এটি একনেকে তোলা হবে। আশা করা যায় আগামী বছরের প্রথম দিকে কাজ শুরু হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে মুজিবনগর থেকে মুক্তিযুদ্ধের পুরো ইতিহাস দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরা যাবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, জেলা প্রশাসক ড. মুনছুর আলম খান, পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহীনসহ সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

এর আগে, ঢাকা থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন হেলিকপ্টারে মুজিবনগরে পৌঁছান। এরপর পর্যটন মোটেলে গার্ড অব অনার শেষে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা। পরিদর্শন শেষে মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে জেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতা সড়ক (মুজিবনগর-কলকাতা) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচন সভা অনুষ্ঠিত হয়।