প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের এক মাস পর মামলা, যুবক গ্রেফতার

মোংলায় প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে (১৯) ধর্ষণের ঘটনায় এক মাস ৫ দিন পর মোংলা থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক নয়ন মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৯ মার্চ) গভীর রাতে নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (২০ মার্চ) তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গত ১৪ ফেব্রয়ারি বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের দত্তেরমেঠ এলাকায় গ্রেফতার নয়নের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘শুক্রবার রাতে এক প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রাতেই নয়ন মণ্ডলকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এক মাস আগের ঘটনা হলেও অভিযোগ পেয়ে মামলা গ্রহণ ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, মোংলা উপজেলার ভুক্তভোগী তরুণী (১৯) এলাকার একটি স্কুলে মায়ের সঙ্গে একটি এনজিওর কর্মশালায় ১৪ ফেব্রুয়ারি যোগদান করে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেয়েটি একা বাড়ির দিকে রওনা হয়। পথিমধ্যে নয়ন মণ্ডলের বাড়ির সামনে গেলে রাস্তায় নয়নের সঙ্গে দেখা হয়। এ সময় মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায় নয়ন। বাড়িতে কেউ না থাকায় ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে সে।

পরে বিষয়টি তরুণী তার মাকে বললে, তারা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানান। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও দুই মেম্বার সমঝোতা করে দেওয়ার কথা বলে তরুণীর বাবাকে নানাভাবে ঘুরিয়ে আসছিলেন। তাই এ ঘটনায় থানায় অভিযোগও হয়নি। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নয়ন মণ্ডল পলাতক ছিল। তবে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আজমল হোসেন ও সজল ছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইস্রাফিল হাওলাদারের মধ্যস্থতায় সালিশ বৈঠক করে সমাধান করবেন বলে জানানো হয়। কিন্তু ঘটনার এক মাস পার হলেও কোনও বিচার না পেয়ে প্রতিবন্ধী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার রাতে মোংলা থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন তরুণীর বাবা। রাতেই মোংলা থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে নয়ন মণ্ডলকে গ্রেফতার করে।

ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা বলেন, ‘আজমল ও সজল মেম্বার বলেছিলেন, তারা চেয়ারম্যান ইস্রাফিলের মাধ্যমে এর বিচার করবেন। কিন্তু চেয়ারম্যান এখনও বিচার করেননি। এ ব্যাপারে ওই দুই মেম্বার থানায় অভিযোগও করতে দেননি।’

ইউপি মেম্বর সজল বলেন, ‘আমি এ ঘটনার কিছু জানি না, তবে মেম্বর আজমল সব কিছুই জানেন।’

মেম্বর আজমল বলেন, ‘চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদার ইউপি নির্বাচন নিয়ে ঝামেলায় থাকার কারণে এই বিচার সম্পন্ন হয়নি। তবে নির্বাচনের পরে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।’

মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইস্রাফিল হাওলাদার বলেন, ‘প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের একটি ঘটনায় সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু যে ঘটনা ঘটিয়েছে সে পলাতক থাকায় একটু দেরি হয়।’ এ ব্যাপারে শুক্রবার রাতে থানায় মামলার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান।