আমদানি সয়াবিন ভারতে রফতানি, দেশের বাজারে বাড়ছে দাম

বিদেশ থেকে আমদানি করা ডেইরি ও পোল্ট্রি ফিডের সয়াবিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে রফতানি করা হচ্ছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে এসব সয়াবিন আমদানি করে পোল্ট্রি ফিড তৈরি করছেন। এতে দেশের বাজারে ডেইরি ও পোল্ট্রি ফিডের দাম বাড়ছে।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সয়াবিনবোঝাই ৪৫টি ট্রাক ভারতে প্রবেশ করেছে। এই পণ্য নিয়ে আজ আরও ৩০টি ট্রাক রাত ১১টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশটিতে প্রবেশ করবে।

বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২০০-২২০ ট্রাক বিভিন্ন পণ্য ভারতে রফতানি হয়। এর মধ্যে দিনে গড়ে ৭০-৮০ ট্রাক সয়াবিন ভারতে রফতানি হচ্ছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সয়াবিন রফতানি করেছে মেসার্স পূরবী ট্রেডিং খুলনা। এরপর রয়েছে মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ ঢাকা, মেসার্স বগুড়া মাল্টি অয়েল মিল, মেসার্স মিম ইন্টারন্যাশনাল যশোর, মেসার্স বেঙ্গল অ্যাগ্রো চট্টগ্রাম, মেসার্স বেঙ্গল অ্যাগ্রো খুলনা ও মেসার্স রাজলক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ খুলনা।

এদিকে, গত ৫ সেপ্টেম্বর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক (উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইং) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে বাংলাদেশ থেকে সয়াবিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে বলা হয়, প্রাণিসম্পদ খাতে ডেইরি ও পোল্ট্রি ফিডে সয়াবিন একটি অন্যতম উপাদান। দেশে বছরে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন সয়াবিন প্রয়োজন হয়। এর বেশিরভাগই আমদানি করতে হয়। সয়াবিন রফতানি করলে দেশে ডেইরি ও পোল্ট্রি শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। বাড়বে পোল্ট্রি ফিডের দাম। নিষেধাজ্ঞার পরপরই সয়াবিন রফতানি বন্ধ করে দেয় বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বন্দর এলাকায় ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়।

নিষেধাজ্ঞার চার দিন পর ৯ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত আরেকটি আদেশে সয়াবিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

আমদানিকারক আইয়ুব আলী বলেন, ‘বিদেশ থেকে আমদানি করে আনা সয়াবিন দেশের চাহিদা না মিটিয়ে বাইরের দেশে রফতানি করলে ডেইরি ও পোল্ট্রি শিল্প মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ ট্রাক সয়াবিন ভারতে রফতানি হচ্ছে। দেশের ডেইরি ও পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সয়াবিন রফতানি বন্ধের বিকল্প নেই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রথমে ৫ সেপ্টেম্বর একটি চিঠিতে সয়াবিন রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা জারি করি। পরে চার দিনের মাথায় আরেকটি চিঠি ইস্যু নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছি। ফলে দেশীয় বাজারে ডেইরি ও পোল্ট্রি ফিডের দাম কেজি প্রতি ১৫-২০ টাকা বেড়েছে। যা পরবর্তী সময়ে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার শামিমুর রহমান বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ি থেকে সয়াবিন রফতানি বন্ধের জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউজকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। একই অফিস থেকে আরেকটি চিঠি পাঠিয়ে সয়াবিন রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। দেশীয় পোল্ট্রি ও ডেইরি ফিডের একটি অন্যতম উপাদন সয়াবিন। যার বেশিরভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।’