‘নড়াইলের ঘটনায় রাজনৈতিক অপশক্তি জড়িত’

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়ার সাহাপাড়ায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হওয়া হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। পরিদর্শন শেষে এই এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন তারা।

বুধবার (২০ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি দিঘলিয়া এলাকায় দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর, মন্দির ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র পান ব্যবসায়ী গোবিন্দ সাহার বাড়িঘর পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেন।

পরিদর্শন শেষে দিঘলিয়া সার্বজনীন মন্দিরে স্থানীয় মন্দিরের পুরোহিত, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এ সময় বাহাউদ্দিন নাছিম, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মশিয়ুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘এ অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। যারা এ ধরনের ভাঙচুর ও জ্বালাও পোড়াও করেছে, তারা পরিকল্পিতভাবে করেছে। এটার পেছনে রাজনৈতিক অপশক্তি জড়িত। সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে বাংলাদেশের সম্প্রীতি, উন্নতি ও অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে, তারা এসব অপকর্ম করেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সুস্পষ্ট কঠোর অবস্থান। বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সব ধর্ম ও মতের লোকজন এ দেশে শান্তিতে বসবাস করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দিঘলিয়ার এই ন্যক্কারজনক ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় মোকাবিলা করতে চাই।’ 
 
সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে এ দেশে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রটি দেশে-বিদেশে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, হামলা, মন্দিরে হামলাসহ নানা অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশকে সবসময় অস্থিতিশীল পরিবেশে রাখতে চায়। বাংলাদেশে সব সম্প্রদায়ের লোক সম্প্রীতির বন্ধনে অটুট থেকে যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে সে লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ‘নড়াইলে আগে কখনও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি রেখেছি, সঠিক তদন্ত করে বিচার করতে হবে। যাতে অপরাধীরা আর কখনও এ ধরনের ঘটনা না ঘটায়। আমি আপনাদের পাশে আছি। গত ১৫ জুলাইয়ের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন শুরু করা হয়েছে।’