‘বারবার বলেছি আর মারিস না’

‘বারবার বলেছি তোরা আর মারিস না। কিন্তু অজ্ঞান না হওয়া পর্যন্ত তারা আমাকে হকিস্টিক ও পাইপ দিয়ে মারতেই থাকে।’ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) যশোর জেনারেল হাসপাতালের বেডে শুয়ে কথাগুলো বলছিলেন যশোর মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক জাকির হোসেন বিপ্লব (২৮)। পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কয়েক ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে যশোর মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র হোস্টেলের ১০৫ নম্বর রুমে জাকিরকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাকিরের ভাই জাহাঙ্গীর আলম যশোর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দেন। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

আহত জাকির রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হরিশ্বর গ্রামের শহিদ জামানের ছেলে। 

জাকির বলেন, ‘আমি মেডিক্যাল হোস্টেলের ১০৫ নম্বর রুমে থাকি। পাশের ১০৪ নম্বর রুমে প্রায়ই গাঁজার আসর বসে। আমি এর প্রতিবাদ করি। মঙ্গলবার ১০২ নম্বর রুমে গাঁজার আসর বসান শামিম হোসেন, আব্দুর রহমান আকাশ, মেহেদী হাসান লিয়ন, শাকিব আহমেদ তানিমসহ অজ্ঞাত কয়েকজন। শামিমের সঙ্গে আগে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। তার উৎসাহে আমি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আসি। এরপর থেকেই শামিমের পকেটমানি আমাকে দিতে হতো। একপর্যায়ে আমি খরচ চালাতে না পেরে তার থেকে দূরে সরে আসি। এর জেরে ওইদিন তারা আমার রুমে এসে হামলা চালায়।’

জাকির বলেন, ‘রুমে ঢুকেই প্রথমে শামিম আমাকে হকিস্টিক দিয়ে মারা শুরু করেন। আমি পালানোর চেষ্টা করলে সবাই হকিস্টিক ও পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। তারা আমার বাইকের চাবি ও কাগজপত্র নিয়ে নেয়। মারধরে আমি জ্ঞান হারাই। জ্ঞান ফেরার পর দেখতে পাই আমি হাসপাতালে।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শামিমের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। 

যশোর মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. রাসেল এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে চাননি। 

যশোর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ মহিদুর রহমান বলেছেন, ‘জাকিরের হাত ও পা ভেঙেছে। বুকের হাড়েও আঘাত লেগেছে। এ ঘটনায় অধ্যাপক ডা. নূর কুতুবুল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’

যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রূপণ কুমার সরকার বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। শামিম হোসেন, আব্দুর রহমান আকাশসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।