স্থানীয় বাজারে কাঁকরোল, করলা, ঝিঙ্গা ও চিচিংগা বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। বিদেশে রফতানিকারক কোম্পানির প্রতিনিধির কাছে তা বিক্রি করা হয় ৩৬ থেকে ৩৮ টাকায়। এতে কৃষকরা আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন সবজি চাষে।
গোমড়া গ্রামের কৃষক জয়নাল বলেন, ‘দুই বছর ধরে কাঁকরোল চাষ করছি, লাভও বেশি পাচ্ছি। এ বছর চার কাঠা (২০ শতংশ) জমিতে কাঁকরোল চাষ করেছি। খরচ হয়েছে মাত্র ৫ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত কাঁকরোল বিক্রি করছি ২০ হাজার টাকার, আরও ২০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।’
কৃষক আহাম্মদ আলী বলেন, ‘আগে সবজি হাটে নিয়ে বিপাকে পড়তে হতো। বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে যেত। তখন অনেক সময় লোকসানে সবজি বিক্রি করতে হতো। এখন ঢাকায় বিক্রি করায় বেশি মূল্য পাচ্ছি। আবার শুনছি বিদেশেও যাচ্ছে আমাদের কাঁকরোল, হয়ত আরও বেশি দাম পাবো।’
সবজির আড়তদার সুরুজ আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রচুর পরিমাণ সবজি চাষ হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে চাহিদা না থাকায় ন্যায্য দাম পাওয়া যায় না। আমি প্রথমে ঢাকার কাওরান বাজারে সবজি বিক্রি করতে যেতাম। সেখান থেকে ঢাকার এ এস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানির প্রতিনিধির মাধ্যমে জুন মাসে তিন দফায় সাড়ে চার মেট্রিক টন সবজি বিক্রি করেছি। এসব সবজিগুলোর বড় একটি অংশ কুয়েতে রফতানি করবে ওই প্রতিষ্ঠান। ওই কোম্পানি কুয়েত, দুবাই ও মালয়েশিয়াতে কৃষিপণ্য রফতানি করে থাকে। জুলাই মাসেও আরও পাঁচ থেকে ছয় মেট্রিক টন সবজি তাদের কাছে বিক্রি করার কথা রয়েছে। কিন্তু, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কৃষকদের জমির মাটি পরীক্ষা থেকে শুরু করে ফসল তোলা পর্যন্ত সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কৃষি বিভাগের নিবিড় তত্ত্বাবধানে হাত পরাগায়ণ, জৈব বালাইনাশক ও যুক্তিসঙ্গত বালাইনাশক ব্যবহারে বিষমুক্ত সবজির চাহিদা বাড়ছে।’
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার ঝিনাইগাতী উপজেলায় ৫৪০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণ করে সিংহভাগ সবজি জামালপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যেত। এখন তা বিদেশেও যাচ্ছে।