জয়ের আনন্দে কাঁদলেন সানজিদার বাবা

অবশেষে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফিটা জিতলো বাংলাদেশ। ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েছেন সানজিদা-সাবিনারা। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শিরোপা পেলো বাংলাদেশ। নারী ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত নাম সানজিদা আক্তার। তার আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রাম, সেইসঙ্গে গোটা বাংলাদেশও। এজন্য কলসিন্দুর গ্রাম বইছে আনন্দের বন্যা।

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে নারী ফুটবলে প্রতিনিধিত্ব করছেন ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর থেকে উঠে আসা একদল কিশোরী ফুটবলার। পায়ের জাদুতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তারা। লাল সবুজের পতাকাকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরেছেন। পরিচিতি করেছেন কলসিন্দুর গ্রাম। তাই তো নারী ফুটবল দলের কোনও খেলা থাকলে আগ্রহ নিয়ে টিভির সামনে বসে থাকেন ওই গ্রামের ফুটবলভক্ত ও সমর্থকরা। তার ব্যতিক্রম ঘটেনি আজও। 

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচকে সামনে রেখে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কলসিন্দুরবাসীর মনে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল। বিকাল ৪টা থেকে খেলোয়াড়দের আত্মীয়-স্বজন, ভক্ত-সমর্থক ও গ্রামবাসীর মাঝে খেলা নিয়ে চলছিল আলোচনা। খেলা শুরুর কিছুক্ষণ পরই গোলের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে গ্রামজুড়ে। সন্ধ্যা থেকে সে আনন্দ উচ্ছ্বাসে রূপ নেয়। উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে কলসিন্দুর গ্রামের ঘরে ঘরে। 

জয়ে উচ্ছ্বসিত ফুটবল তারকা সানজিদা আক্তারের বাবা লিয়াকত আলী। জয়ের প্রতিক্রিয়া জানতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‌‘আমার আনন্দের শেষ নেই আজ। বাবা হিসেবে আমি গর্বিত। দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে মেয়েগুলো। এই আনন্দ প্রকাশের ভাষা জানা নেই।’

একই গ্রামের ফুটবল তারকা শামসুন্নাহার জুনিয়রের বাবা বাবা নেকবর আলী বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা পরিবারের সদস্যসহ কলসিন্দুরের ফুটবল ভক্তরা শামসুন্নাহার জুনিয়রসহ সব খেলোয়াড়ের জন্য দোয়া করেছি। যোগ্যতার প্রমাণ রেখে বাংলাদেশের মেয়েরা সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এই জয়ে গ্রামের সবাই আনন্দিত।’

একই গ্রামের মারিয়া মান্ডার মা এনোতা মান্ডা বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন হয়ে মেয়েগুলো বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। ভবিষ্যতে মারিয়াসহ ফুটবল দলের এসব খেলোয়াড় আরও বড় জয় বাংলাদেশের জন্য এনে দেবে-এটাই প্রত্যাশা।’

এসব ফুটবল তারকার স্থানীয় কোচ জুয়েল মিয়া বলেন, ‘কলসিন্দুরের অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে ক্ষুদে ফুটবলারদের নিয়মিত অনুশীলন চলছে। আজকের এই জয় নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের উৎসাহ জোগাবে।’

কলসিন্দুরের নারী ফুটবল টিমের ম্যানেজার মালা রানী সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাতীয় নারী ফুটবল দলে কলসিন্দুরের মেয়েরা খেলছে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। আশা করি, আগামী দিনে দেশের হয়ে আরও ভালো খেলবে তারা, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’