দুর্নীতিমুক্ত রাজশাহী গড়ার প্রতিশ্রুতি চার মেয়র প্রার্থীর

রাজশাহীতে সুজনের অনুষ্ঠানে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেন চার মেয়র প্রার্থীকেন নির্বাচন করছেন? মেয়র নির্বাচিত হলে কী করবেন? ভোটারদের এমন নানা প্রশ্ন নিয়ে রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে সরাসরি জনগণের মুখোমুখি হয়েছিলেন সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া চার মেয়র প্রার্থী। শনিবার (১৪ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নগরীর সাহেববাজার এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে চার মেয়র প্রার্থীই রাজশাহীকে দুর্নীতিমুক্ত নগর গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ছাড়াও গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের শফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহী সিটির ভোটারের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন এক মেয়র প্রার্থী

আফজাল হোসেন নামে এক ভোটার বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে প্রশ্ন করেন, পাঁচ বছরে আপনি কি করেছেন?’ জবাবে বুলবুল বলেন, ‘পাঁচ বছরের মধ্যে আমি ৩৪ মাস জেলখানা আর কোর্টের বারান্দায় থেকেছি। বাকি সময় শিখেছি এবং জনগণের জন্য কাজ করেছি। কী করেছি সেটা সবাই জানেন। এবার নির্বাচিত হলে এবং সরকার সহযোগিতা করলে রাজশাহী নগরীকে একটি সমৃদ্ধ নগরীতে পরিণত করবো। আমি যতদিন দায়িত্বে থেকেছি, নগর ভবনে কোনও দুর্নীতি হয়নি। আগামীতেও হবে না।’

মেয়র প্রার্থী হাবিবুর রহমানের কাছে রজব আলী নামে এক কলেজ শিক্ষক জানতে চান, তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে মাদকের বিরুদ্ধে কী করবেন। জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি মাদক নির্মূল করতে চাই। এটা আমার নির্বাচনি ইশতেহারে আছে। মাদকের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে একটা সুন্দর নগরী গড়তে চাই। রাজশাহীকে বলা হয় শিক্ষানগরী। অথচ এর ১০ শতাংশও অর্জিত হয়নি। আমি প্রকৃত শিক্ষানগরী গড়তে চাই।’

সুজনের অনুষ্ঠানে রাজশাহীর চার মেয়র প্রার্থী

আবদুল্লাহ আল মুঈজ নামে এক ভোটার স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী মুরাদ মোর্শেদকে প্রশ্ন করেন, ‘ভোটের আগে সবাই বলে দুর্নীতি করবো না, আপনি নির্বাচিত হওয়ার পর দুর্নীতি করবেন না তার নিশ্চয়তা কী?’ জবাবে মুরাদ মোর্শেদ বলেন, ‘নিজের কোনও স্বার্থ ছাড়াই ২০ বছর ধরে মানুষের জন্য কাজ করেছি। অতীতে কোনও দুর্নীতি করিনি। তাই আস্থা রাখতে পারেন, ভবিষ্যতেও দুর্নীতি করবো না।’

বোরহান উদ্দিন নামে এক কলেজছাত্র মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চান, তিনি দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন গড়তে পারবেন কি-না। শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অবশ্যই পারবো। দুর্নীতি বন্ধ করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে চাই। কারণ, দুর্নীতি থেকে সন্ত্রাসের উৎপত্তি। মেয়র হলে আমি যে সম্মানি পাবো, তার অর্ধেক জনকল্যাণে দান করবো। হোল্ডিং ট্যাক্স অর্ধেক করে দেবো।’

রাজশাহীতে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি চার মেয়র প্রার্থীর

অনুষ্ঠান শুরুর আগে চার মেয়রপ্রার্থী একে অপরের হাতে হাত রেখে অঙ্গীকার করেন, আচরণবিধি মেনে তারা নির্বাচন করবেন। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুজনের একটি কাগজে স্বাক্ষরও করেন। উপস্থিত ভোটাররাও সকল প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করার শপথ নেন।

অনুষ্ঠানে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘রাজশাহী-৫ আসনের এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারার মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন আসতে পারেননি। এ জন্য আমি সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সভাপতিত্ব করেন, সুজনের মহানগর কমিটির সভাপতি পিয়ার বক্স। জেলা কমিটির সভাপতি আহমেদ শফিউদ্দিন এতে স্বাগত বক্তব্য দেন।