বন্যায় ভেসে গেছে সাড়ে তিন কোটি টাকার মাছ

জাল দিয়ে ঘিরে মাছ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন চাষিরানওগাঁর আত্রাই উপজেলায় প্রবল বর্ষণ ও ঢলের পানিতে দুই শতাধিক পুকুর ডুবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। অনেক চাষি সরকারি বা বেসরকারি পুকুর লিজ নিয়ে মৎস্য চাষ করেছিলেন। তাদের স্বপ্ন বানের জলে ভেসে গেছে। চাষিরা চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে সরকারি-বেসরকারি প্রায় হাজার খানিক পুকুর রয়েছে। অনেকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বিধি মোতাবেক দরপত্র দাখিলের মাধ্যমে সরকারি খাস পুকুর মাছ চাষের জন্য লিজ নেন। এছাড়া অনেকে কৃষি ফসলে বছরের পর বছর লোকসানের পর, মাছ চাষের জন্য নিজ জমিতে পুকুর খনন করেন। কিন্তু এবারের বন্যায় তাদের পুকুর ডুবে মাছ ভেসে যাওয়ায় ব্যাপক লোকসানের শিকার হয়েছেন তারা।

জাল দিয়ে ঘিরে মাছ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন চাষিরাগত সপ্তাহে আকস্মিকভাবে আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে প্রায় ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। পানি বেড়ে যাওয়ায় আত্রাইয়ে তিনটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। পানিতে ডুবে যায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের দুই শতাধিক পুকুর। ভেসে যায় মৎস্য চাষিদের প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মাছ। অনেকে বিভিন্ন অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করছিলেন। তারা এখন ঋণের টাকা পরিশোধ করা নিয়ে হতাশায় ভুগছেন।

উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের আসাদুজ্জামান ট্রপি, আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের দীঘা গ্রামের শহিদুল ইসলাম, পাঁচুপুর গ্রামের মোস্তা, শামসুর রহমান ও ভূষণচন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘আমরা বুকভরা আশা নিয়ে মাছ চাষ করেছিলাম। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় আমাদের সব আশা চুরমার হয়ে গেছে।’

জাল দিয়ে ঘিরে মাছ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন চাষিরাউপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘বন্যার পানিতে পুকুর ডুবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।’