নৌকার প্রার্থীকে মোটরসাইকেল থেকে ফেলার অভিযোগে শিক্ষককে ‘মারধর’

বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নে নির্বাচনি প্রচারণাকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। রবিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে উপজেলার কাশিয়াহাটা তিনমাথা মোড়ে এ
ঘটনা ঘটে।

এতে নৌকার প্রার্থী হাসান আহমেদ জেমস মল্লিক ও স্বতন্ত্র (আনারস) প্রার্থী শফিকুল ইসলামের সমর্থক শিক্ষক গোলাম মোস্তফা আহত হয়েছেন।

এদিকে, সংঘর্ষে শিক্ষক আহতের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মথুরাপুর মুলতানী পারভীন শাহজাহান তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধন করেছে। অপরদিকে, পাল্টা হামলার অভিযোগ এনে বিকালে নৌকার প্রার্থী হাসান আহমেদ জেমস মল্লিক থানায় বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, তার ভাই মথুরাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম মর্তুজাসহ চার জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এবং হুমকি-ধমকির অভিযোগে ডিজি করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, তৃতীয় ধাপে আগামী ২৮ নভেম্বর ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নে ভোট হবে। চেয়ারম্যান পদে পাঁচ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রবিবার রাত ১১টার দিকে নৌকা প্রার্থী মল্লিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস)
মার্কার শফিকুল ইসলামের সমর্থকরা প্রচারণায় বের হন। তিনমাথা রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে দুই প্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি হয়। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নৌকার প্রার্থী মল্লিক তার মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। সংবাদ পেয়ে তার সমর্থকরা কাশিয়াহাটা বাজারে গিয়ে
শিক্ষক গোলাম মোস্তফাকে পিটিয়ে আহত করেন।

এ বিষয়ে শিক্ষক গোলাম মোস্তফার ছোট ভাই ও ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম মর্তুজা বলেন, ‘নৌকা মার্কার প্রার্থী নিজে থেকেই মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। অথচ মিথ্যা
অভিযোগে আমার শিক্ষক ভাইয়ের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেছে। তাই শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।’

নৌকার প্রার্থী মথুরাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আহমেদ জেমস মল্লিক জানান, তার নির্বাচনি প্রচারণার সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা অতর্কিতভাবে মোটরসাইকেলের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তখন এ সংবাদ পেয়ে তার সমর্থকরা ধাওয়া করলেও তাদের না পেয়ে ফিরে আসে।

তার অভিযোগ, ‘তারা আমাকে নির্বাচন করতে দেবে না বলে হুমকিধমকি দিয়ে আসছে। এ বিষয়ে ধুনট থানায় লিখিত অভিযোগ ও পৃথক জিডি করেছি। তবে ওই শিক্ষককে মারধর করা হয়নি।’

মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলামের দাবি, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থীর সমর্থকরা আমার লোকজনদের মারধরসহ হুমকিধমকি দিয়েছে। তাদের হুমকির কারণে ভোট চাইতেও বের হতে পারছি না।’

ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী একটি জিডি ও পৃথক আরেকটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’