যুবলীগ নেতা জেম হত্যা: পৌর মেয়রসহ ৪৮ জনের নামে মামলা

রাজনৈতিক বিরোধের জেরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সাবেক যুবলীগ নেতা এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস‍্য খায়রুল আলম  জেম হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে এ মামলা করা হয়। এতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১৫ থেকে ২০ জনকে।

হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর শনিবার (২২ এপ্রিল) রাতে নিহতের ভাই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় এ মামলা করেন।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন।

মামলার বাদী মনিরুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোখলেসুর রহমান, জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেসবাহুল হক টুটুলসহ মোট ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে ওই মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় আরও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ বলেন, সদর থানার ওসির সঙ্গে কথা বলে মামলা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।

জানা গেছে,  প্রায় এক বছর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদের সঙ্গে পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমানের বিরোধ চলছে। নিহত যুবলীগ নেতা জেম সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদের অনুসারী ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত বলে জানা গেছে, তারা সবাই পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানের অনুসারী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ জানান, খায়রুল আলম জেম হত্যার ঘটনায় তার ভাইয়ের করা মামলা রাতেই রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে খায়রুল আলম জেম শহরের উদয়ন মোড়ের একটি হোটেল থেকে ইফতারি কেনেন। পরে বাসায় ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে খাইরুল আলম জেমের লাশ নিয়ে শহরে বিক্ষোভ করেন সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদের অনুসারীরা। বেলা ৩টার দিকে শহরের শান্তিমোড়ে অবরোধ করেন। বিকালে পাঠানপাড়ার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন এমপি আব্দুল ওদুদ।

একই দিন সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি শিবগঞ্জ পৌরসভার মরদানা গ্রামে জেমের মরদেহ দাফন করা হয়।