বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবকের লাশ ৭৮ দিন পর ফেরত পেলো পরিবার

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক ইউসুফ আলীর (২৬) লাশ ৭৮ দিন পর মঙ্গলবার দুপুরে দেশে ফেরত নিয়ে এসেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা (বিজিবি)। চলতি বছরের গত ৫ জুন ভোরে পাটগ্রাম উপজেলার কালীরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন ইউসুফ ।

নিহত ইউসুফ পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের মেসেরডাঙা এলাকার শাহ জামালের ছেলে।

মঙ্গলবার দুপুরে ভারতীয় কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানার ওসি রাহুল তালুকদার পাটগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হোসেনের কাছে ইউসুফের লাশ হস্তান্তর করেন। এসময় তিস্তা ৬১-বিজিবি ব্যাটালিয়নের নাজিরগোমানী বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লিয়াকত হোসেন ও ভারতীয় ১৬৯ রানীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের শ্রীমুখ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অরবিন্দ কুমার উপস্থিত ছিলেন।

পাটগ্রাম থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতের পরিবার, বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জুন ১০-১২ জনের একদল গরু পারাপারকারী রাখাল পাটগ্রাম উপজেলার কালীরহাট সীমান্তের ৮৫৭ নম্বর মেইন পিলারের ১৩ নম্বর সাব পিলার ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে গরু আনতে যায়। গরু নিয়ে ফেরার পথে ভারতীয় রানীনগর ১৬৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মীররাপা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ইউসুফ। অপর সদস্যরা পালিয়ে আসেন। পরে বিএসএফের উপস্থিতিতে মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশ ইউসুফের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।  

নিহতের বাবা শাহ জামাল বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে নিহত ছেলের লাশ ৭৮ দিন পর আজ হাতে পেলাম। এখন জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।’  

নাজিরগোমানী বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘গত ৫ জুন ভোরে কালীরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন ইউসুফ। আমরা তার লাশ ফেরত আনার জন্য বিএসএফের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। ৭৮ দিন পর আজ তার লাশ ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় বিএসএফ ও পুলিশ ইউসুফের লাশ ফেরতের জন্য ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দাবি করে আসছিল। অবশেষে বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশ এই সার্টিফিকেট ছাড়াই লাশ ফেরত দিতে সম্মত হয়। আজ তারা লাশ ফেরত দিলো।’
 
পাটগ্রাম থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক বিএসএফের গুলিতে নিহত ইউসুফের লাশ তার পরিবারের কাছে দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিডি করা হয়েছে।’