বগুড়া সদরের হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি রোহান চৌধুরীকে (২৪) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার জয়বাংলার হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পুলিশ, গ্রামবাসী ও স্বজনরা জানান, নিহত রোহান চৌধুরী বগুড়া সদরের মানিকচক গ্রামের কামাল চৌধুরীর ছেলে। বগুড়া সদর উপজেলার মানিকচক গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান শাওনের বিরুদ্ধে সদর থানায় চারটি অস্ত্র, দুটি মাদক, দুটি হত্যাচেষ্টা ও একটি চুরির মামলা রয়েছে। ব্যবসায়িক লেনদেনকে কেন্দ্র করে শাওন ও তার বাহিনীর লোকজন গত ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে জয়বাংলার হাট বন্দর কমিটির সভাপতি ও বগুড়া সদরের কুটুরবাড়ি দক্ষিণপাড়ার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মুরগি ব্যবসায়ী সেলিম মিয়াকে কুটুরবাড়ি মধ্যপাড়ায় পথরোধ করেন। এরপর হত্যার উদ্দেশে চাইনিজ কুড়াল ও চাকু দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন।
মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। আহত সেলিমকে অচেতন অবস্থায় প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। এ ঘটনায় তার বাবা গিয়াস উদ্দিন গত ২৩ সেপ্টেম্বর সদর থানায় পেনাল কোডের বিভিন্ন ধারায় মামলা করেন।
র্যাব সদস্যরা মঙ্গলবার সকালে বগুড়া সদর থানা এলাকা থেকে শাওনকে গ্রেফতার করেন। দুপুরে আহত সেলিমের পক্ষে গ্রামবাসীরা আসামিদের গ্রেফতারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এদিকে মঙ্গলবার রাতে সেলিমের পরিবারের সদস্যরা ওই মামলার আসামি রোহান চৌধুরীকে আটক করেন। পরে তাকে পুলিশে না দিয়ে মারধর করে ছেড়ে দেন। এর প্রতিশোধ নিতে বুধবার সকালে রোহান ও তার লোকজন সেলিম মিয়ার বাড়িতে হামলা করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেলিমের লোকজন রোহান চৌধুরীকে আটক করেন। তাকে বেধড়ক মারধর করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন শহরে যাওয়ার পথে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।