২৭ বছর আগের ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে লোক দিয়ে কৌশলে ডেকে এনে ডাকাতি নাটক সাজিয়ে যুবক ছানা মাঝিকে (৪৪) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে করেছে বাবু মাঝিদের বিরুদ্ধে। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্য মাকহাটি গ্রামে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে স্বাধীন নামের এক ছেলেকে দিয়ে আমার স্বামীকে ডেকে নেন বাবু মাঝি। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। ওই দিন রাত ১১টার দিকে আমার স্বামীকে হত্যা করে বাবু মাঝি তার ওপর পিস্তল রেখে যায়।’ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন স্বজনরা।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসের অনুসারী ছানা মাঝি এবং তার আরও সাত ভাই নিজ গ্রাম ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয়গ্রহণ করেন। ছানা মাঝি ৯ মাস ধরে সদরের বজ্রযোগিনীর ইউনিয়নের ড্যাগ্রাপাড়া গ্রামে পরিবার নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে তার পূর্বপরিচিত স্বাধীন নামের এক ব্যক্তি তাকে ডেকে নিয়ে যায়,তারপরই নিখোঁজ হয় ছানা মাঝি।
ওসি বলেন, ‘ছানা মাঝিকে একটি পাটক্ষেতে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে মধ্য মাকহাটির তাল গাছতলা সড়কে ফেলে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে ছানা মাঝিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছানার রক্তাক্ত দেহের সঙ্গে একটি একনালা শটগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ পাওয়া গেছে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৯৮ সালে একই এলাকার বাবু মাঝির ভাই শিপন মাঝিকে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন ছানা মাঝি ও তার ভাইয়েরা। দীর্ঘদিন জেলহাজতে থেকে মামলা থেকে নিষ্কৃতি পান ছানা মাঝিরা। এরপরই বাবু মাঝি ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে ছানা মাঝিকে কৌশলে ডেকে এনে পিটিয়ে হত্যা করে। এর মধ্যে সমাজের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয় বাবু মাঝিদের বাড়িতে ডাকাত এসেছে। ডাকাতি করার সময় স্থানীয় জনতা গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে বলে নাটক সাজানো হয়।’
ওসি আরও জানান, এই ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছেন তারা। এই হত্যাকাণ্ডে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান ওসি। ছানা মাঝির স্ত্রী তিন সন্তানের জননী ফাতেমা বেগম স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেছেন।