গলায় রশি ও মুখে কাপড় ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় ইতিমনিকে

Gaibandha-pic-1গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ছয় বছরের শিশু ইতিমনিকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামি কিশোর আকাশ মিয়া (১৫)। রবিবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সুন্দরগঞ্জ) বিচারক মইনুল হাসান ইউসুবের কাছে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।

আকাশ জবানবন্দিতে ইতিমনিকে নিজ ঘরে গলায় প্লাস্টিকের রশি পেঁচিয়ে ও মুখে কাপড় ঢুকিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ডোবায় ফেলে রাখার কথা স্বীকার করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বামনডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. তাজুল ইসলাম জানান, আকাশকে আদালতে হাজির করা হলে সে ইতিমনিকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এছাড়া গ্রেফতার তার মা আম্বিয়া বেগমকে (৪০) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় বিচারক।

এর আগে, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর ফলগাছা (মালতলা) গ্রামের নুর কাশেমের ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একই গ্রামের মৃত আবদুস সামাদের ছেলে আকাশ মিয়া ও তার মা আম্বিয়া বেগমকে গ্রেফতার করে।

এ ঘটনায় শিশু ইতিমনির বাবা দিল হোসেন বাদী হয়ে আকাশকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে রবিবার সকালে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করে। মামলায় তার মা আম্বিয়া বেগম ও তার বড় ভাই আজাহার আলীকে আসামি করা হয়।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিয়ার রহমান জানান, আকাশকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে সে ইতিমনিকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হলেও বিচারকের সামনে শিশুকে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

তিনি আরও জানান, রবিবার দুপুরে লাশের ময়নাতদন্ত গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। এরপর তার লাশ পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এছাড়া হত্যার সঙ্গে জড়িত আকাশের বড় ভাই আহাজার আলীকেও গ্রেফতারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে ইতিমনি আকাশের মোবাইল ফোন নিয়ে দৌড় দিয়েছিল। এ কারণে আকাশ তাকে মারধরকরে। এক পর্যায়ে আকাশ ইতিমনিকে ধরে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মুখে কাপড় ও গলায় প্লাস্টিকের রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে আকাশ তার বড় ভাই আজাহার আলী ও মা আম্বিয়া বেগমের সহযোগিতায় ইতিমনির লাশ বাড়ির পাশের নুর কাশেমের ডোবায় ফেলে রাখে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডোবায় ইতিমনির লাশ ভাসতে দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

/এআর/