তিস্তায় নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পরও উদ্ধার হননি বিজিবি জওয়ান সুমন

নিখোঁজ বিজিবি জওয়ানকে উদ্ধারে স্পিডবোটের সাহায্যে তিস্তা নদীতে তল্লাশি। ছবি-মোয়াজ্জেম হোসেননিখোঁজ হওয়ার ১৪ ঘণ্টা পরও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ল্যান্স নায়েক সুমন মিয়াকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সোমবার (২৬ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে লালমনিরহাটের দহগ্রাম সীমান্তে তিস্তা নদীতে ভারতীয় গরু পাচার প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি।

এদিকে তিস্তা নদীর পানি মারাত্মক ঘোলার কারণে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ক্যামেরার মাধ্যমে নিখোঁজ সুমনের উদ্ধার কাজ করা যাচ্ছে না।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘটনাস্থলে থাকা লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল গোলাম মোরশেদ।

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তিস্তা নদীতে তল্লাশি করে নিখোঁজ বিজিবির ল্যান্স নায়েক সুমন মিয়াকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

গোলাম মোরশেদ আরও বলেন, ‘বিজিবি-বিএসএফ’র পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমেও উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার তৎপরতার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিস্তার পানি মারাত্মক ঘোলা হওয়ার কারণে হেলিকপ্টার আনা যাচ্ছে না। তবে সুমন মিয়াকে জীবিত বা মৃত উদ্ধার না করা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

20170627_062951বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সুমন মিয়া রংপুর ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নে কর্মরত হলেও তিনি লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে দহগ্রাম বিজিবি ক্যাম্পে সংযুক্ত ছিলেন। সোমবরা (২৬ জুন) দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দহগ্রাম বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টহল দল দহগ্রামের সীমান্তের ৬ নম্বর মেইন পিলারের ৩ নম্বর সাব পিলার এলাকায় তিস্তা নদীতে আবুলের চর যান। এ সময় ল্যান্স নায়েক টুটুল মিয়া, ল্যান্স নায়েক সুমন মিয়া ও উচ্চ প্রু মারমা ওই টহল টিমে ছিলেন। সেখানে গরু চোরাকারবারীদের সঙ্গে গরু টানাটানির এক পর্যায়ে টুটুল মিয়াকে নদীতে নামানো হয়। এক পর্যায়ে চোরাকারবারীরা গরুর রশি ছেড়ে দিলে দুটি গরুসহ কোনও রকমে চরে ফিরে আসেন টুটুল মিয়া। এদিকে টুটুল মিয়া তলিয়ে যাচ্ছে ভেবে তাকে উদ্ধারের জন্য রাইফেল ও গোলাবারুদ উচ্চ প্রু মারমার হাতে জমা দিয়ে সুমন মিয়া তিস্তা নদীতে নামেন। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন তিনি। এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

বিজিবি রংপুর সেক্টর কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দহগ্রামে আবুলের চর থেকে তিস্তা ব্যারেজ পর্যন্ত স্পিড বোটে বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম সাইফুল ইসলাম সাইফ স্যারসহ আমি পরিদর্শন করেছি। বিজিবি, বিএসএফ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল নিখোঁজ সুমন মিয়াকে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। এসব কাজে স্থানীয় জনতাও সহযোগিতা করছেন। বিজিবির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

লালমনিরহাটের দহগ্রামের আবুলের চর নামক ঘটনাস্থল থেকে তিস্তা ব্যারেজ পর্যন্ত তিস্তা নদী পর্যবেক্ষণ করেন বিজিবির রংপুর রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম সাইফুল ইসলাম সাইফ।

রংপুর ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সুবেদার আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, নিখোঁজ বিজিবির ল্যান্স নায়েক সুমন মিয়ার বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার আটঘড়িয়ার আউশপাড়া এলাকায়। তার স্ত্রীর নাম জেসমিন আক্তার।

/এআর/