আজ ঘন কুয়াশায় ঢাকা পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস

ঘন কুয়শাচ্ছন্ন পঞ্চগড়

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে অনেক দেরিতে হলেও শীত পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে পঞ্চগড়ে ঘন কুয়াশা পড়ছে। যে কারণে যানবাহনসহ মানুষকেও খুব সতর্কভাবে চলাচল করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে শীতের তীব্রতাও বাড়তে শুরু করেছে।  সোমবার দুপুরে পঞ্চগড়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলে জানিয়েছে তেতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।

আকষ্মিকভাবে গত তিন দিন ধরে পঞ্চগড়ে ঘনকুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। শেষ বিকেল থেকে কুয়াশা পড়া শুরু হয়। রাতে ঝরছে কুয়াশা বৃষ্টি। কোনও কোনও দিন দুপুর পর্যন্ত আবার কখনও সারা দিনেও সূর্যের মুখ দেখা যায় না। ঘনকুয়াশার কারণে দিনমজুর, শ্রমজীবী ও রিকশা-ভ্যান চালকরা বাইরে যেতে না পারায় দুর্ভোগে পড়েছেন। খুব বেশি কাজ না থাকলেও অনেকেই ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। যানবাহনগুলো দিনের বেলা হেড লাইট জ্বালিয়ে ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। ঘনকুয়াশার কারণে কাজকর্ম না থাকায় চরম সঙ্কটে পড়েছে উপার্জনক্ষম ও খেটে খাওয়া মানুষরা। রাতের বেলা এক হাত দূরের কোনও কিছুই দেখা যাচ্ছে না। শীতার্তরা শীতবস্ত্রের সন্ধানে ছুটছে। অনেকেই রাতে ও দিনে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে শীতার্তরা

তেতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, পঞ্চগড়ে সোমবার দুপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৩ ডিসেম্বর ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটা ছিল এখন পর্যন্ত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

বাস চালক মজিবর রহমান জানান, ‘ঘনকুয়াশার কারণে গাড়ি চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ধীরে ধীরে ও সাবধানে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এর ফলে সময় ও অর্থ দুটোই বেশি খরচ হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না।

রিকশা চালক মোসলেম জানান, ঘনকুয়াশার কারণে বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। রাস্তাঘাটেও লোকজনের চলাচল কম। যাত্রী না পাওয়ায় আয় উপার্জনও কমেছে। 

জেলার সদর উপজেলার মীরগড় এলাকার সেলিম মুরশেদ জানান, ঘনকুয়াশার জন্য মোটসাইকেলের হেডলাইট জ্বালিয়ে অফিসে যেতে হচ্ছে।

জেলা শহরের তুলারডাঙ্গা এলাকার মরিয়ম বেগম জানান, ঘন কুয়াশার জন্য ঘর থেকে বের হতে পারছি না। কাজকর্ম না করলে কি খাবো। 

জেলা শহরের রামেরডাঙ্গা দিনমজুর শরিফুল ইসলাম জানান, খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে শহরে গিয়েছি কাজের সন্ধানে। ঘন কুয়াশার জন্য কেউ কাজে ডাকছে না। কাজ না পেয়ে আবার বাসায় ফিরে যাচ্ছি।

পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র তৌহিদুল ইসলাম জানান, যৎসামান্য কম্বল পেয়েছি। তা এরইমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিদিন শত শত শীতার্ত লোক পৌরভবন ও বাসায় আসছে।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে প্রায় ১৮ হাজার পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে শীতার্তদের বাঁচাতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: মংডুতে বিজিবি-বিজিপি বৈঠক: ৬ জেলেকে ফেরত দিয়েছে মিয়ানমার