১৪ বছর পর ফের চালু হলো রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র

রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রপ্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর এলেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। বেগম রোকেয়া দিবস পালন করতে তার জন্মস্থান রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামের বসতভিটা পরিষ্কার করে রঙ করা হয়। রোকেয়া দিবস পালন শেষে আবারও অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকে বাড়ি। তবে সরকার বাড়িটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ১৪ বছর বন্ধ থাকা রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রটি আবারও চালু করা হয়েছে।

স্মৃতি কেন্দ্রের দুই কর্মকর্তা উপ-পরিচালক ফারুখ আহাম্মেদ ও সহকারী গন্থাগারিক আবেদা সুলতানা ১৪ বছর পর সুপ্রিম কোর্টের আদেশে চাকরি ফিরে পেয়েছেন। তবে দুই নাইট গার্ড বাতেন ও মজনু চাকরি ফিরে না পেলেও পেয়েছে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি। ফলে স্মৃতি কেন্দ্রটি ফের সচল করেছে বাংলা একাডেমি। তবে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকায় স্মৃতি কেন্দ্রে শুধু গান আর ছবি আঁকা শেখা ছাড়া আর কোনও কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি।

স্মৃতি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সংগ্রহ শালায় থাকা আলমারিগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। গবেষণাগারটিও বন্ধ রয়েছে। সুদৃশ্য ভবনটির পলেস্তার খসে পড়ছে। লাইব্রেরিতে নেই তেমন কোনও বইপত্র। রোকেয়ার বাস্তুভিটায় এখন পর্যন্ত সেখানে কোনও স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের উদ্যেগ নেওয়া হয়নি।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হামিদা আলী শনিবার দুপুরে স্মৃতি কেন্দ্রসহ বেগম রোকেয়ার বাড়ি ঘুরে দেখেন। প্রচণ্ড হতাশা প্রকাশ করে এই প্রতিনিধিকে বলেন,  বেগম রোকেয়া ছাড়া নারীরা আজ যে অবস্থানে এসেছে তা কোনদিনই সম্ভব হতো না। অথচ স্মৃতি কেন্দ্র দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। বেগম রোকেয়ার স্মৃতিকে জাগ্রত রাখতে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।

রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র১৪ বছর বিনা বেতনে কাজ করা দুই নাইট গার্ড বাতেন ও মজনু বলেন,  ‘আমরা না খেয়ে স্মৃতি কেন্দ্রটি সন্তানের মতো দেখভাল করেছি। অথচ আমাদের চাকরি হলো না। এখন আমরা নিঃস্ব।’ দৈনিক মজুরিতে অস্থায়ী নিয়োগ পেলেও তাদের চাকরি স্থায়ী করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।

রোকেয়া স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দুলাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রটি তৈরির উদ্যোগ নেন। তিনি এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। তিনি আবার এটির নব নির্মিত ভবনের উদ্বোধনও করেছিলেন। ফলে তিনি পারেন রোকেয়ার স্মৃতিকে চির জাগ্রত করতে।’

সার্বিক বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক এনামুল হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র ও তার বাস্তুভিটা রক্ষায় উদ্যেগ নেওয়া হচ্ছে।