অস্ত্র আইনের মামলায় সাবেক ৬০ সেনা সদস্য কারাগারে

আদালতে আসামিদের কয়েকজনরংপুরে অস্ত্র আইনে দায়ের করা একটি মামলায় সাবেক ৬০ সেনা সদস্যকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকালে রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা এ আদেশ দেন। এর আগে আদালতে হাজির হয়ে আসামিরা জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করেন। জেলা ডিসি অফিসের অফিস সহকারী সামসুলের মাধ্যমে ‘ভুয়া’ অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে অস্ত্র ক্রয় করার ঘটনায় এই সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। রংপুরের অতিরিক্ত পিপি শাহ মো. নয়ন নুর রহমান টফি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, রংপুরের ডিসি অফিসের অফিস সহকারী সামসুল আলম জালিয়াতির মাধ্যমে ‘ভুয়া’ অস্ত্রের লাইসেন্স তৈরি করে দেওয়ার নামে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। লাইসেন্স গ্রহণকারীরা জন প্রতি পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা দিয়ে লাইসেন্স গ্রহণ করে অস্ত্র ক্রয় করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে অফিস সহকারী সামসুল আলমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার তৎকালীন এসআই মামুনুর রশীদ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আড়াইশ ব্যক্তিকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) মোখতারুল আলম। আসামিদের বেশির ভাগই সাবেক সেনা সদস্য। এদের মধ্যে ৬০ জন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

কারাগারে পাঠানো ৬০ সাবেক সেনা সদস্য হলেন— আনোয়ারুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, পিন্টু চন্দ্র, মহিউদ্দিন, আবুল কালাম, আলাউদ্দিন, আলম মিয়া, হায়াতুল্লা, একেএম আইনুর রহমান, মোবারক আলী, শাহিন শিকদার, আবুল বাশার, ওমর ফারুখ, শহিদুল ইসলাম, আবু সাইদ, রাশেদুল ইসলাম, শহিদুল কাদের, মোস্তফা, মামুনুর রশীদ, আবু সালেহ, হাবিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেন, আজিম উদ্দিন, আবুল কাফেত, জুয়েল রহমান, আবু জাহেম, জাহাঙ্গীর আলম, কামরুল ইসলাম, আবু সায়েম, মেজবাহ উদ্দিন, আব্দুল কাফি, সাইদুর রহমান, মমিন উদ্দিন, বেলাল হোসেন, শহিদুল ইসলাম, শাহাজাহান, মাহবুবার রহমান, ইসমাইল হোসেন, রতন সরকার, বছির উদ্দিন, মাহবুব হোসেন, রফিকুল হোসেন, হাকিম মিয়া, জুলহাস আলম, হাসান, নোমান উদ্দিন, হাফিজুর রহমান, নাজিক হোসেন, আকরাম হোসেন, হারুন রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল বারী, আব্দুল হান্নান, মন্টু মিয়া, শফিকুল ইসলাম, ইউসুফ উদ্দিন, শহিদ, রফিকুল , শাহিন ও মহিউদ্দিন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী পিপি নয়ন নুর রহমান জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। এরপর তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। বিচারকের কাছে জামিনের আবেদন করা হলে, তা নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী রুহুল আমিন তালুকদার জানিয়েছেন, চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করে আসামিরা। আমাদের আশা ছিল, তারা জামিন পাবেন, কিন্তু পেলেন না।