ফুলছড়ি-সাঘাটা হানাদারমুক্ত দিবস আজ

Gaibandha2আজ ৪ ডিসেম্বর, গাইবান্ধার ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে ফুলছড়ি ও তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট এলাকা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

যুদ্ধ চলাকালে ফুলছড়ি ও সাঘাটাকে মুক্ত করতে গিয়ে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে ৫ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়া সম্মুখযুদ্ধে ২২ পাকসেনা নিহত হন। নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন-আফজাল হোসেন, কবেজ আলী, যাহেদুর রহমান বাদল, ওসমান গণী এবং আব্দুল সোবহান।

এই ৫ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার লাশ সাঘাটা উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের খামার ধনারুহা প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে সগুনা নাম পরিবর্তন করে এলাকাটিকে মুক্তিনগর ইউনিয়ন নামকরণ করা হয়। শহীদদের স্মরণে ধনারুহা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে কবরের পাশেই নির্মাণ করা হয় স্মৃতি সৌধ। 

এদিকে, ৪ ডিসেম্বর ফুলছড়ি-সাঘাটা উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস পালনে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সকালে ধনারুহা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন ফুলছড়ি ও সাঘাটার মুক্তিযোদ্ধারা। দুপুরে আলোচনা সভা ও দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হয়।  

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল তৎকালীন ফুলছড়ি সিও অফিসের (বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয়) চার কিলোমিটার দূরে তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট এলাকায় ঘাঁটি স্থাপন করে। ক্যাম্প থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আশপাশ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়, আওয়ামী লীগ সমর্থক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজনের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। এক পর্যায়ে তারা বেশ কিছু বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। নারীদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। 

তারা আরও জানান, পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে এলাকার ছাত্র-যুবক ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন জুন মাসের প্রথম দিকে। ১১নং সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার রোস্তম আলী খন্দকারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের দিনব্যাপী গেরিলা যুদ্ধের পর সন্ধ্যার দিকে গবিন্দিতে পাকিস্তানের সেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়।