লালমনিরহাটে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ, আ.লীগ প্রার্থীর অস্বীকার


লালমনিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম স্বপন। রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কছে অভিযোগ করেন, লালমনিরহাটবাসী পরিবর্তন চায় এটা বুঝতে পেরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির একজন শীর্ষ নেতার নির্দেশে দলীয় ক্যাডাররা প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের বুথে বুথে ঢুকে ভোটারদের ভোটের বাটন নিজেরাই টিপে দিচ্ছে। প্রসঙ্গত: লালমনিরহাটে ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, তিনি প্রতিটি কেন্দ্র পরিদর্শন করছেন। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাননি।

স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম স্বপন বলেন, লালমনিরহাটে আজ ভোট উৎসবের প্রত্যাশা ছিল সাধারণ ভোটারদের। কিন্তু, ভোটাররা পরিবর্তন চায় বুঝতে পেরে আজ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা ভোটচুরির উৎসব শুরু করেছেন। স্বয়ং অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান উপস্থিত থেকে ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতাদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকিয়ে দিয়ে ভোটারদের বদলে নিজেরাই বাটন টিপে দিচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করেন, জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহজাহান কলোনি কেন্দ্রে ঢুকে তার এজেন্ট ও কর্মীদের মারধর করে বের করে দিয়েছে। ভোট কেন্দ্রে নিয়ম নীতির কোনও বালাই নাই। ক্ষমতাসীন দলের একজন কার্ডধারী এজেন্টের সঙ্গে কার্ড ছাড়াই একাধিক এজেন্ট বুথে বুথে ঢুকে ভোট নিয়ন্ত্রণ করছেন। এই ভোট লালমনিরহাটবাসী কোনোভাবে মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, তিনি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করবেন না, শেষ সময় পর্যন্ত দেখে যাবেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন

স্বপন বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দেওয়া হলে তারা যখন আসে তখন কিছুক্ষণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে, তারা চলে গেলেই আবার ভোটকেন্দ্র দখল শুরু হয়ে যায়। এই প্রার্থী বলেন, এত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে নির্বাচন আমি আমার জীবনেও দেখি নাই। পুরো নির্বাচনটাই অনিয়মে ভরা। এসময় তার কয়েকজন সমর্থক আহত হয়ে লালমনিরহাট সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলেও দাবি করেন তিনি।

তবে, এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে। মানুষ নৌকার পক্ষে। তিনি দাবি করেন,অনেকগুলো কেন্দ্র ঘুরে দেখেছেন, কোথাও কোনও অনিয়ম চোখে পড়েনি। ভোটাররা যা রায় দেয় তা তিনি মেনে নেবেন। জয়ী হলে পৌরসভার উন্নয়নের জন্য যা যা করা প্রয়োজন সব করবেন।

এদিকে, নেছারিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা এক ভোটার অভিযোগ করেন, কেন্দ্রে ঢুকে পরিচয় দেওয়ার পর নৌকা প্রতীকের এক এজেন্ট তাকে ইভিএম মেশিন বুঝিয়ে দেওয়ার নাম করে নিজেই ভোটের বাটন টিপে দিয়েছেন।
এদিকে খোঁচাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অদূরে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই কেন্দ্রে পুরুষ ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। 

পূর্ব থানাপাড়ার নারী ভোটার সুফিয়া বেগম অভিযোগ করেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখেন তার ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার পরেও তার ভোট অন্য কেউ কীভাবে দিতে পারে এই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

এদিকে এসব অভিযোগের জবাবে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আহসান বলেছেন, এসব বিষয়ে আমি অবগত নই। দুপুর পর্যন্ত কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। কেউ লিখিতভাবে কোনও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।