স্বামীকে মৃত দেখিয়ে ভাতা তুলছেন ১৭ বছর

নীলফামারীর সৈয়দপুরে মনজিলা বেওয়া নামের এক নারীর বিরুদ্ধে জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে ১৭ বছর ধরে বিধবা ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে। তার বাড়ি উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পশ্চিমপাড়া (দোলাপাড়া) গ্রামে।

স্থানীয়রা জানায়, মনজিলা বেওয়ার আধা পাকা বাড়ি আছে। তার স্বামী চৌমুহনী বাজারে একটি হোটেলে কাজ করেন। তারপরও ইউনিয়ন সমাজকর্মীর সঙ্গে ইউপি মেম্বারের যোগসাজশে ভাতার কার্ড করে বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি টাকা তুলছেন।

মনজিলা বেওয়া জানান, ২০০৪ সালে ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার ছিলেন তার ভাই আইয়ুব আলী। তিনি সমাজকর্মী ফরিদা বেগমের মাধ্যমে বিধবা ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, তার স্বামী বাড়িতে থাকেন না। মাঝে মাঝে বাড়ি থেকে চলে যায়। দীর্ঘদিন তার কোনও খোঁজ-খবর থাকে না। ওই সময় তিনি প্রায় এক বছর নিখোঁজ ছিলেন। এ অবস্থায় সন্তানদের নিয়ে সংসার চালানো কষ্ট হওয়ায় তার ভাই (আইয়ুব আলী) সরকারি সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। ২০০৪ সালের ১ জুলাই থেকে নিয়মিত ভাতা তুলছেন মনজিলা।

এ ব্যাপারে সমাজকর্মী ফরিদা বেগম জানান, বিধবা ভাতা শুরু হয় ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে। এ সময় যারা এসেছেন তাদেরকে ভাতা কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। ইউপি মেম্বার বা চেয়ারম্যান যাচাই করে নামের তালিকা দিতেন। সে অনুযায়ী আমরা ভাতার অন্তর্ভুক্ত করতাম। 

তিনি আরও বলেন, একেকটি ইউনিয়নে প্রায় নয় থেকে ১২ হাজার ভাতাভোগী। এত মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তদন্ত করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই হয়তো এমন ভুল হয়েছে। এতদিন কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়নি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ জানান, আমি নতুন এসেছি। তাই এ ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না। তাছাড়া এটা অনেক দিনের কথা। সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ দিলে আমরা কার্ডটি বাতিল করে দেবো। কার্ড করে দেওয়ার বিষয় যদি আমার অফিসের কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকে, তা প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।