দিনাজপুর পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ১২ কোটি টাকা

দিনাজপুর পৌরসভার কাছে ১২ কোটি টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পাওনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানানো হয়।

জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। অনুষ্ঠানে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুজন সরকার, দিনাজপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, প্যানেল মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল, স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার প্রকল্পের পরিচালক মাহাবুবুল আলম চৌধুরী, নেসকো দিনাজপুরের পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসিবুর রহমান, স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান দেওয়ান ও সাইয়েদুন মোরসালিন, দিনাজপুর বিক্রয় ও বিতরণ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুর রহমান ও ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম শাহাদত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের রাজস্ব আদায়ে সমস্যা থাকায় অনেক বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এ জন্য সরকার স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনে উদ্যোগ নিয়েছে। এতে করে যেমন গ্রাহক উন্নত সেবা পাবে, একইসঙ্গে সরকারের রাজস্ব আদায় নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ অপচয় রোধ, বিল সংক্রান্ত জটিলতার অবসান হবে।’

স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন বিষয়ক মতবিনিময় সভা

তিনি বলেন, ‘দিনাজপুর পৌরসভার কাছে ১২ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত জটিলতায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে সমস্যায় পড়বে জনগণ। অথচ পৌরবাসী যথারীতি তাদের কর পরিশোধ করছে। পৌর কর্তৃপক্ষ চাইলেই করের অর্থ দিয়ে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারে। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় দিনাজপুর পৌরসভার জন্য ইউজিআইআইপির ২৫ কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ ফেরত গেছে। পৌরসভার নিয়মিত কর্মচারীদের বেতনও বকেয়া রয়েছে। পৌরসভার করসহ বিভিন্ন খাতের, বরাদ্দের, খরচের অর্থ এমনকি পৌরসভার বাজেটও উপস্থাপন করা হয় না।’ এ সময় তিনি পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চান।

মেয়র বলেন, ‘১২ বছর পূর্বে আমি যখন মেয়র নির্বাচিত হই, তখন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল পৌনে পাঁচ কোটি টাকা। এরপর আমি প্রায় ৭৮ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছি। তবে আমার জানামতে, সাড়ে ৭ কোটি টাকার মতো বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে।’

মেয়রের কথার বিরোধিতা করে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা দাবি করেন, দিনাজপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে ১২ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানোর পরও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী বলেন, ‘উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাওয়াটা দুঃখের বিষয়। পৌর মেয়রের গাফিলতির কারণে উন্নয়ন সেবা থেকে বঞ্চিত জনগণ।’