বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো কিশোরের, অতিরিক্ত মদপানে যুবকের

কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক কিশোরের ও অতিরিক্ত মদপানে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নাগেশ্বরীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আরিফুল ইসলাম (১৭) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১১ জুন) দুপুরে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তেলিয়ানীকুটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

অপরদিকে, ভূরুঙ্গামারীতে অতিরিক্ত মদপানে মিজানুর রহমান নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে গুরুতর অবস্থায় উপজেলা থেকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। 

নাগেশ্বরী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তামবিরুল ইসলাম এবং ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজাহার আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যাওয়া আরিফুল নাগেশ্বরীর বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তেলিয়ানীকুটি এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলীর ছেলে। মিজানুর রহমান শিলখুড়ি ইউনিয়নের উত্তর ছাট গোপালপুর গ্রামের মৃত সফি উদ্দিনের ছেলে। তিনি উপজেলার পাগলাহাট বাজারে মাংস বিক্রি করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে আরিফুল বাড়ির পাশে সেচ পাম্পের বৈদ্যুতিক সংযোগ খুলতে গেলে বিদ্যুতায়িত হন। স্থানীয়রা আরিফুলকে বিদ্যুতের তারে জড়ানো দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে পরিবারের লোকজন বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করেন। পরে নাগেশ্বরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।  

অপরদিকে, ভূরুঙ্গামারীতে অতিরিক্ত মদপানে মিজানুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার রাতে উপজেলার পাগলাহাট বাজারে এরশাদ নামে এক সহযোগীকে নিয়ে মদপান করেন মিজানুর। অতিরিক্ত মদপানে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। গুরুতর অবস্থায় মিজানুরকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান। আহত এরশাদ নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে অতিরিক্ত মদ পানে মৃত্যুর খবরে পুলিশ ভোর রাতেই নিহত কসাই মিজানুরের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার  (৯ জুন) অতিরিক্ত মদ্যপানে একই গ্রামের শাহজামাল (৫০) নামে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনিও পাগলাহাট বাজারে মাংস বিক্রি করতেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতে সীমান্তবর্তী পাগলাহাট বাজারে মদপানের আয়োজন চলে। এসব মদে অনেক সময় স্পিরিট মিশিয়ে বিক্রি করা হয়।

শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন অতিরিক্ত মদপানের কারণে মিজানুরের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার পরিবার মদপানে মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজাহার আলী বলেন, ‘মিজানুর অতিরিক্ত মদপানে মারা গেছেন, এটি এখনও নিশ্চিত নয়। তবে অভিযোগ উঠায় তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায়  অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’

পাগলাহাট বাজারে মদ বিক্রি ও সেবনের অভিযোগের বিষয়ে আজাহার আলী বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন কোনও তথ্য নেই। প্রকাশ্যে মদপানের কোনও অভিযোগও আমাদের কাছে নেই। তবে রঙের সঙ্গে মেশানোর কাজে ব্যবহৃত স্পিরিট পান করেছেন মিজানুর। আমরা সেটি খতিয়ে দেখছি।’