তাবলিগে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিখোঁজ: ২ শিক্ষক গ্রেফতার

লালমনিরহাটে রাব্বিতুল ইসলাম (১৩) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় টাঙ্গাইল র‌্যাব-১২ ক্যাম্পের সহযোগিতায় তার দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাতে টাঙ্গাইল থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী আলিমের ডাঙা হাফিজিয়া মাদরাসার রবিউল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলাম।

নিখোঁজ রাব্বিতুল ওই মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। হাতীবান্ধা থানা পুলিশ ও নিখোঁজ শিক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ জুলাই শিক্ষক রিয়াজুল ইসলাম ওই মাদ্রাসার ১৩ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় চার মুরব্বিসহ মোট ১৮ জন তিন দিনের তাবলিগ জামায়াতে উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের দুর্গম চর সোহাগের বাজার এলাকায় একটি মসজিদে যায়। গত ৭ জুলাই সকালে ওই চরে তিস্তা নদীতে গোসল করতে নেমে ওই শিক্ষার্থী ডুবে নিখোঁজ হয়েছে বলে শিক্ষকরা প্রচার করে। পরে তাবলিগের সময় একদিন কমিয়ে দ্বিতীয় দিনে অন্য সবাই ফিরে এলেও রাব্বিতুল আসেনি। ওই শিক্ষার্থীর সন্ধান চাইলে ওই দুই শিক্ষক পরিবারের নিকট পানিতে ভেসে যাওয়ার দাবি করে আসছিল। পরে আন্দোলনের মুখে এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয় ওই দুই শিক্ষক।   

রাব্বিতুল ইসলামের পিতা রশিদুল ইসলামের দাবি, ‘আমার একমাত্র সন্তান তিস্তা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়েছে, এমন নাটক তৈরি করে শিক্ষক রবিউল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলাম। তারা আমার ছেলেকে হয় গুম করেছে, না হয় পাচার করে দিয়েছে। আমি ছেলেকে জীবিত ফেরত চাই এবং এই ঘটনার প্রতিকার চাই।’

হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থী রাব্বিতুল নিখোঁজের ঘটনায় তার বাবা রশিদুল ইসলাম গত ১৭ জুলাই লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিসিয়াল আমলি আদালত-৪ এ অভিযোগ দাখিল করে। বিজ্ঞ আদালত ওই অভিযোগটি থানায় এজাহার হিসেবে গণ্য করে আসামিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। টাঙ্গাইল র‌্যাব-১২ ক্যাম্পের সহযোগিতায় ২ আগস্ট দিবাগত রাতে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ এজাহার নামীয় অভিযুক্ত শিক্ষক রবিউল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে হাতীবান্ধায় নিসে আসে। বুধবার (৩ আগস্ট) বিকালে তাদের লালমনিরহাট আদালতে সোপর্দ করলে জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।’  

উল্লেখ্য, নিখোঁজ রাব্বিতুলকে জীবিত ফেরত চেয়ে গত ১৪ জুলাই লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে তার পরিবার ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। বক্তারা ওই শিক্ষার্থীকে জীবিত ফেরত চেয়ে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। কিন্তু ৩ আগস্ট পর্যন্ত তার সন্ধান মিলেনি।

এ ঘটনায় বাংলা ট্রিবিউনে গত ১৪ জুলাই ‘তাবলিগে গিয়ে নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্র, শিক্ষক বললেন জিনের আছর’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।