ব্যস্ত কারিগররা, বেশি বিক্রি হচ্ছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের পতাকা

ফিফা বিশ্বকাপের ২২তম আসরের পর্দা উঠতে আর পাঁচ দিন বাকি। সারাবিশ্বে চলছে ফুটবল উন্মাদনা। অনেকেই প্রিয় ফুটবল দলকে সমর্থন জানিয়ে বাড়ির ছাদে ও গাছে পতাকা টানিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের পতাকা ও জার্সির চাহিদা থাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।

নীলফামারী জেলা শহরে কাপড়ের তৈরি বিভিন্ন দেশের পতাকা, ফেস্টুন ও ব্যানার শোভা পাচ্ছে দরজিবাড়িতে। ফুটবলপ্রেমীরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে অর্ডার দিয়ে নিজের পছন্দের দেশের পতাকা বানিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

শহরের দরজি জাহাঙ্গীর আলমের দোকানে ঝুলছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি, ফান্স, জাপান, ইংল্যান্ড ও পর্তুগালসহ বিভিন্ন দেশের জাতীয় পতাকা। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বিভিন্ন সাইজের পতাকা তৈরি করছেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিশ্বকাপ শুরু হতে আর কয়েক দিন বাকি। তাই ফুটবলপ্রেমীদের পছন্দের পতাকা আগে থেকেই বানিয়ে রাখছি।’

আর্জেন্টিনার সমর্থক ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বিশ্বকাপ এলেই আমি বাড়ির ছাদের ওপর পতাকা টানাই। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। বিশ্বকাপের প্রত্যেকটি খেলা টেলিভিশনের পর্দায় বসে থাকি।’

Nilphamari-2

জেলা শহরের হাজি মহসিন সড়ক সংলগ্ন ‘সাথী টেইলার্সের’ মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বকাপ শুরু হলে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে হৈচৈ শুরু হয়। বিভিন্ন দেশের পতাকা কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন তারা। ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের পতাকা তৈরিতে কারিগরদের ব্যস্ততাও বাড়ে।’

দরজি হামিদ ইসলাম বলেন, ‘সৈয়দপুর শহরের আমার মতো প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন পতাকা তৈরির কাজ করছেন। আমরা ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পতাকা বিক্রি করছি। এর বাইরেও ক্রেতার নিজস্ব পছন্দ ও সাইজ অনুযায়ী পতাকা তৈরি করে নিচ্ছে, যেগুলোর দাম দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সমর্থক বেশি।। তাই এই দুই দেশের পতাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে।’

Nilphamari-3

একই শহরের দর্জি পাপ্পু বলেন, ‘শুধু এই শহরেই নয় আমাদের তৈরি পতাকা নীলফামারী, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জসহ রংপুর জেলার তারাগঞ্জ, পাগলাপীর, দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর, চিনির বন্দর, ভুষির বন্দর, বদরগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন দলের জার্সিও তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে।’

জেলা দর্জি কল্যাণ সমিতির সভাপতি শাহাদত হোসেন সাজু বলেন, ‘বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় সারাবিশ্বে উন্মাদনা শুরু হয়। ফুটবলপ্রেমীরা বাড়ি, দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পতাকা টানানোর প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। এই উপলক্ষে পতাকা তৈরির কাজও বেড়ে যায়।’

নীলফামারী জেলা কালচারাল অফিসার কে এম আরিফুজ্জামান আরিফ জানান, ‘খেলা শুরু হতে আর কয়েকদিন বাকি। অনেকেই বাসা-বাড়ির ছাদে ও গাছের ডালে পতাকা টানিয়েছেন। ফুটবলের প্রতি যে মানুষের ভালোবাসা, দরজির দোকানে পতাকা তৈরির ব্যস্ততা দেখলেই তা সহজে বোঝা যায়।’