বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি রবিউলের লাশ দাফন

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি রবিউল ইসলামের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার (৩ এপ্রিল) রাতে জানাজা নামাজ শেষে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়নের ইসলামপুর ডাঙাপাড়া কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে, শনিবার (১ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের শমসেরনগর বেলবাড়ির ডাঙা (তেলিপাড়া) সীমান্তে পথে গরু নিয়ে ফেরার সময় বিএসএফের গুলিতে রবিউল (৫২) নিহত হন এবং একই এলাকার শহিদুল ইসলাম (৪৩) গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।  

নিহত ব্যক্তি উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের বুড়িমারী দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন ডাঙাপাড়া (কলাবাগান) এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে। শহিদুল একই এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে। তিনি বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। রবিবার নিহতের লাশ নিজ বাড়ি থেকে পাটগ্রাম থানা পুলিশ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। আজ ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যা ৭টায় রবিউল ইসলামের লাশ নিজ বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিজিবি, পুলিশ, সীমান্ত এলাকা ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের ৮৬৪ নম্বর মেইন পিলারের শমসেরনগর বেলবাড়ির ডাঙা এলাকা দিয়ে ৫/৭ জন বাংলাদেশি চোরাকারবারী ভারতীয় গরু পারাপার করার সময় কোচবিহার মেখলিগঞ্জ ১৬৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চুয়াঙারখাতা (চেনাকাটা ক্যাম্প) ক্যাম্পের একটি টহলদল তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই রবিউল ইসলাম নিহত ও শহিদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। অন্য রাখালরা নিহত ও আহতদের নিয়ে পালিয়ে আসেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ নিহত রবিউলকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় আসে এবং আহত ব্যক্তি রংপুরের একটি অজ্ঞাত হাসপাতালে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

নিহতের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে রুবিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আগামী ১০ মে আমার সন্তান জন্মের তারিখ দিয়েছে চিকিৎসক। বাবা খুবই হাসিখুশি ছিলেন। কিন্তু সেই বাবা আজ লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরলো। তিনি আমার সন্তানকে দেখে যেতে পারলেন না। দোয়াও করতে পারলেন না। আমরা এই হত্যার বিচার দাবি করছি।’

পাটগ্রাম থানার ওসি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার রাত ৯টায় লাশ পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে দাফন করেছে পরিবারের সদস্যরা।’