আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্রে বিএনপি নেতার জামিন

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে নাশকতার পরিকল্পনার মামলায় গ্রেফতার হওয়া ময়নুল ইসলাম লিঠু নামে এক বিএনপি নেতার জামিন দিয়েছেন আদালত। পাঁচ দিন কারাগারে থাকার পর সোমবার (২০ নভেম্বর) জামিনে মুক্তি পান তিনি।

ময়নুল ইসলাম লিঠু (৪৭) কামারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বলে জানা গেছে। আর তার জামিনের জন্য আদালতে দাখিল করা কাগজপত্রের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদ ও আওয়ামী লীগের দলীয় প্যাডে দুটি প্রত্যয়নপত্র যুক্ত করে দেওয়া হয়।

ওই প্রত্যয়নের একটিতে কামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ আর এম মাহফুজার রহমান রাশেদ ও অপরটিতে স্বাক্ষর করেছেন কামারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সরকার।

গত ১৮ নভেম্বর আলাদা প্যাডে সিল-স্বাক্ষর করা ওই প্রত্যয়নপত্রে বলা হয়েছে, ময়নুল ইসলাম কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তিনি দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে ঢাকায় কর্মরত আছেন এবং রাষ্ট্র বা সমাজ বিরোধী কাজে লিপ্ত নেই। তার স্বভাব-চরিত্র ভালো। সেখানে তার ভবিষ্যতের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করা হয়েছে।

এদিকে, জামিন হওয়ার আসার পর ময়নুল ইসলাম লিঠুকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে নানা গুঞ্জনের
সৃষ্টি হয়। বিএনপি নেতাকে এমন প্রত্যয়ন দেওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সরকার ও চেয়ারম্যান এ আর এম মাহফুজার রহমান রাশেদ।

প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কামারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ময়নুল ইসলাম কামারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একজন নির্বাচিত সদস্য। তিনি সভাপতি পদেরও প্রার্থী ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিদ্যালয় চত্বরে সভাপতি নির্বাচনের সময় পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে কী মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে তা জানা নেই। ময়নুলের জামিনের জন্য তার কাছে একটি প্রত্যয়নপত্র চায় স্বজনরা। আমার জানামতে ময়নুল ইসলাম কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নেই মর্মে ব্যক্তিগত প্যাডে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি।’

কামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান রাশেদ বলেন, ‘ময়নুল ইসলাম নামে কাউকে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি কি না তা এই মুহূর্তে জানা নেই। তবে স্মারক নম্বর দেখে
কাল অফিস সময়ে বিষয়টি জানাতে পারবেন বলে জানান।

গত ১৮ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে কামারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চত্বর থেকে ময়নুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ওসি মাহবুব আলম জানান, ময়নুল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি কামারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের পদে আছেন। গত ২৯ অক্টোবর গোপন বৈঠকের সময় সাদুল্লাপুর উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক ছামছুল ইসলামসহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় হওয়া নাশকতা পরিকল্পনার মামলায় জড়িত সন্দেহে ময়নুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি কামারপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মধ্যহাটবামুনী গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে।