গাইবান্ধার ৫ আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল ১৬, স্থগিত ১৮

গাইবান্ধা জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে ৫২ প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্রসহ ১৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ও ১৮ জনের মনোনয়নপত্র স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

হলফনামায় তথ্য গোপন, এক শতাংশ নমুনা ভোটারের স্বাক্ষর ও তথ্যের গড়মিলসহ বিভিন্ন ত্রুটির কারণে এসব মনোনয়নপত্র বাতিল ও স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে রবিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে এই ঘোষণা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক নাহিদ রসুল। এ সময় নিজ নিজ আসনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রার্থীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর মধ্যে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে চার জনের মনোনয়ন বাতিল ও পাঁচজনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়। মনোনয়ন বাতিল করা চারজন হলেন, খেলাফত আন্দোলনের হাফিজার রহমান সরদার, স্বতন্ত্র মোস্তফা মহসিন, আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার ও এবিএম মিজানুর রহমান।

এ ছাড়া স্থগিত করা হয়েছে জাসদের গোলাম আহসান হাবীব মাসুদ, বিএনএফের ওমর ফারুক সিজার, গণফ্রন্টের শরিফুল ইসলাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবু বক্কর সিদ্দিক ও স্বতন্ত্র জয়নাল আবেদীন। আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ সাত জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।

গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে জাসদ ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ পাঁচ জনের মনোনয়ন বাতিল ও দুই জনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়। মনোনয়ন বাতিল করা পাঁচজন হলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবু তাহের সায়াদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র শাহ সারোয়ার কবীর তার স্ত্রী স্বতন্ত্র মাসুমা আক্তার, রফিকুল ইসলাম ও সাজেদুর রহমান। স্থগিত করা হয়েছ জাসদের গোলাম মারুফ মনা ও জাকের পার্টির জহুরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র। এ আসনে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা তিনজন হলেন আওয়ামী লীগের মাহাবুব আরা বেগম গিনি, জাতীয় পার্টির আব্দুর রশিদ সরকার ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) জিয়া জামান খান।

অন্যদিকে গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে তিনজনের মনোনয়ন বাতিল ও দুজনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়। মনোনয়ন বাতিল করা তিনজন হলেন জাসদের খাদেমুল ইসলাম খুদি, স্বতন্ত্র আবু জাহিদ নিউ ও আবু জাফর তৈয়ব।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র সাহারিয়া খান বিপ্লব ও স্বতন্ত্র মঞ্জরুল হক সাচ্চার মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে। আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ সাতজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে তিন জনের মনোনয়ন বাতিল ও দুজনের স্থগিত করা হয়েছে। মনোনয়ন বাতিল তিনজন হলেন এনপিপির রুমি আকরাম, স্বতন্ত্র জাহাঙ্গীর হোসেন ও শ্যামলেন্দু মোহন রায়। এ ছাড়া স্থগিত করা দুজন হলেন আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ ও জাতীয় পার্টির কাজী মশিউর রহমান।

এ আসনটিতে দুজনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন জাকের পার্টির আবুল কালাম আজাদ ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মনোয়ার হোসেন চৌধুরী। 

গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে মনোনয়ন বাতিল করা একজন হলেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ফারজানা রাব্বী বুবলি। এ ছাড়া স্থগিত করা হয়েছে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র। তারা হলেন জাতীয় পার্টির আতাউর রহমান সরকার, বিকল্প ধারার জাহাঙ্গীর আলম, এনপিপির ফারুক মিয়া, স্বতন্ত্র শামসুল আজাদ শীতল ও এইচ এম এরশাদ। এ আসনটিতে শুধু আওয়ামী লীগের মাহামুদ হাসান রিপনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আব্দুল মোত্তালিব জানান, যাচাই-বাছাইয়ে ৫টি আসনে ১৮ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া বাতিল করা হয়েছে ১৬ জনের মনোনয়নপত্র এবং ১৮ জনের মনোনয়নপত্র স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আপিল করে তাদের প্রার্থিতা ফেরতের সুযোগ আছে। জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে ৫৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত ৫২ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।