স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে পালিয়ে বিয়ে করে বরখাস্ত হলেন ইউপি সদস্য

ঠাকুরগাঁওয়ে বাল্যবিবাহ করার দায়ে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যকে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি-১ শাখা থেকে পাঠানো চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আগের ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তান থাকা সত্ত্বেও ইউপি সদস্য তুলারাম রায় গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর রাণীশংকৈল উপজেলার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যান এবং পরে বিয়ে করেন। এ বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এরপর অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন তারা।

রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাকিবুল হাসান বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি-১ শাখা থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাওয়া যায়। সেখানে উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য তুলারাম রায়কে ১৪ বছরের এক স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করার অপরাধে ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯-এর ৩৪(৪)(ঘ) ধারা অনুযায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘চিঠি পাওয়ার পরপরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

ঘটনাটি জানাজানি হলে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বাল্যবিবাহ করার অপরাধে ইউপি সদস্য তুলারামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠি দেন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাচোর ইউপি চেয়ারম্যান জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি শুনেছি। অপরাধ করলে তো শাস্তি পেতে হবেই।’

এ বিষয়ে কথা বলতে ইউপি সদস্য তুলারাম রায়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি। বিয়ের ব্যাপারে নিজের সম্মতির কথা জানিয়ে স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে পছন্দ করে বিয়ে করেছে। এতে আমার কোনও অভিযোগ নেই।’

মেয়ের পরিবারের এই বাল্যবিবাহে সম্মতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সে ব্যাপারে ইউএনও রকিবুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবে উপজেলা প্রশাসন।’