দিনে টার্গেট, রাতে ট্রান্সফরমার চুরি করতে লাগে ২০-২৫ মিনিট

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলাসহ আশপাশের জেলা থেকে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও তার চুরি চোর চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ ও বৈদ্যুতিক তামার তার উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (৬ মে) দিনভর অভিযান চালিয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা ও গাইবান্ধা সদর ও পলাশবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি হওয়া মালামালসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বিকাল ৫টায় সংবাদ সম্মেলন করে ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়। চুরির ঘটনায় উপজেলার জনৈক আল আমিন নামে এক ব্যক্তি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর অধীনে সাব-জোনাল অফিসে অভিযোগ করেন। পরে ঘোড়াঘাট সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মেহেদী হাসান থানায় একটি এজাহার দেন। সেই এজাহারের সূত্র ধরে ওসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ওসি (তদন্ত) দেবব্রত রায় ও এসআই মেহেদী হাসানসহ থানা পুলিশের একটি দল অভিযান করে। এ সময় বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রান্সফরমার চোর চক্রের মোট পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় পাঁচ কেভি একটি ট্রান্সফরমার, ১২০ কেজি অ্যালুমিনিয়ামের এক ফুট করে কাটা তিন বস্তা তার, ১৬০ কেজি নিউট্রাল সার্ভিসের তার পাঁচ বস্তা, ট্রান্সফরমার বসানোর ফ্রেম, ১৬০ কেজি বৈদ্যুতিক তার প্রোটেকশন প্লাস্টিকের কভার, লোহা কাটার দুটি ব্লেডের ফ্রেম, ১৮টি ব্লেড, টেপ, দুটি রেঞ্চ, একটি স্ক্রু ড্রাইভার, দুটি প্লায়ার্স, দুটি লাইলোনের রশিসহ আরও যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- দক্ষিণ দেবীপুরের কাওসার ইসলাম (২২), কশিগাড়ি এলাকার আনারুল ইসলাম (৩৫) ও সাব্বির হোসেন (২২)। তারা তিন জনই ঘোড়াঘাট উপজেলার। পলাশবাড়ী উপজেলার শিমুল তলি এলাকার রতন মিয়া (৩৫) ও চোরাই মালামাল ক্রয়ের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী ডেভিড কোম্পানি মোড়ের রিয়াজ আকন্দ (২৮)। তারা গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা।

জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, তারা ট্রান্সফরমার চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলাসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় এবং পার্শ্ববর্তী জেলা গাইবান্ধার বিভিন্ন থানা এলাকায় ট্রান্সফরমারের তামার তার ও বৈদ্যুতিক তার চুরি করে আসছে। তারা দিনের বেলায় টার্গেট ট্রান্সফরমারের স্থানে রেকি করে এবং রাতে গিয়ে ঢাকনা খুলে তামার তারসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নিয়ে চলে আসে। 
তিনি আরও জানান, ট্রান্সফরমার চুরি করতে তাদের মাত্র ২০–২৫ মিনিট সময় লাগে। চুরির পর ট্রান্সফরমারের খালি বাক্স সাধারণত ঘটনাস্থলেই ফেলে দেয়। চক্রটির সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারেও পুলিশের অভিযান চলছে।