হবিগঞ্জে ভবন নির্মাণের তিন বছরেও চালু হয়নি ট্রমা সেন্টার

হবিগঞ্জ ট্রমা সেন্টারদুর্ঘটনায় হাত-পা ভাঙা রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা দিতে হবিগঞ্জে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ট্রমা সেন্টার। প্রয়োজনীয় বেড, ফার্নিচারসহ যাবতীয় সরঞ্জামও সরবরাহ করা হয়। কিন্তু তারপরও তিন বছর ধরে চালু হয়নি হবিগঞ্জের একমাত্র ট্রমা সেন্টারটি। কবে নাগাদ চালু হবে তাও জানেন না কেউ।  

জানা যায়, ২০১০ সালে ফিজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট নামে সরকার দেশের ছয়টি মহাসড়কের পাশে ১০ শয্যার ট্রমা সেন্টার নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এর উদ্দেশ্য মহাসড়কে দুর্ঘটনায় হাত-পা ভাঙা রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে একটি তিন তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয় ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

২০১৪ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হলেও গণপূর্ত বিভাগ তা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তাস্তর করেনি। ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে ঢাকা অথবা সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে মালামালসংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, ভবন নির্মাণের পরপরই ওই সেন্টারের জন্য যন্ত্রপাতি ও বেড সরবরাহ করে সরকার। তবে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ট্রমা সেন্টারটি চালু না হওয়ায় মালামালগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা হাড়ভাঙা রোগী বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর গ্রামের ইয়ার চান বিবি বলেন, ‘হাড়ভাঙা রোগীদের ঢাকা কিংবা সিলেটে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। যদি ট্রমা সেন্টারটি চালু হতো তাহলে আমাদের ঢাকা কিংবা সিলেট গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতো না। আমরা গরিব, বাইরে চিকিৎসার এত টাকা পাবো কোথায়?’

বানিয়াচং উপজেলার ইকরাম গ্রামের সজলু মিয়া বলেন, ‘ট্রমা সেন্টার চালু না হওয়ায় আমাদের চিকিৎসায় অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে গরিব অসহায় রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমাদের দাবি অবিলম্বে ট্রমা সেন্টার চালু করা হোক।’

অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে মালামালবাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, ‘বাহুবলে ট্রমা সেন্টারটি চালু হলে আমরা উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবো। তাই ট্রমা সেন্টারটি দ্রুত চালুর দাবি জানাচ্ছি।’

একই গ্রামের জলিখা খাতুন বলেন, কী কারণে ট্রমা সেন্টারটি চালু হচ্ছে না তা জানি না। তবে ট্রমা সেন্টারটি চালু হলে আমরা চিকিৎসা নিতে পারতাম।’   

হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে দেরি হয়েছে। তা ট্রমা সেন্টারটি সিভিল সার্জন বুঝে নিচ্ছেন না। এখন সিভিল সার্জনের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সিভিল সার্জনের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করতে পারবো।’

হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. সুচিন্ত চৌধুরী বলেন, ‘কবে নাগাদ উদ্বোধন করা হবে সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত উদ্বোধনের।’